Tip:
Highlight text to annotate it
X
এই চমৎকার সঙ্গীতটি, মঞ্চে প্রবেশের সঙ্গীতটি -
অপেরা আইদা থেকে ‘দি এলিফ্যান্ট মার্চ’ - আমার শেষকৃত্যর জন্য এই সঙ্গীতটাকেই বেছে নিয়েছি আমি --
(হাসি)
-- আপনারা বুঝতেই পারছেন কেন। এটি যেন বিজয়েরই স্মারক সঙ্গীত ।
আমি কিছুই তখন অনুভব করব না, কিন্তু যদি আমি করতাম,
বিজয়ের আনন্দকে আমি অনুভব করতাম শুধুমাত্র জীবন ধারন করার সুযোগ পাওয়ার জন্যই।
আর এই চমৎকার গ্রহটিতে জীবন কাটানোর জন্য,
আর আমাকে বোঝার সুযোগ দেয়ার জন্য
যে প্রথমতঃ কেনই বা আমি এখানে ছিলাম, এখানে না থাকার আগে।
আপনারা আমার অদ্ভুত ইংরেজী বাচনভঙ্গী কি বুঝতে পারছেন?
অন্য সবার মত, গতকালের প্রানী জগত সংক্রান্ত অধিবেশন আমাকেও ভীষনভাবে মুগ্ধ করেছে।
রবার্ট ফুল এবং ফ্রান্স ল্যান্টিং আর অন্যরা --
তাদের দেখানো বিভিন্ন জিনিসের সৌন্দর্য্য ।
শুধু একটু বেখাপ্পা ব্যাপার ছিল যখন জেফরী কাৎজেনবার্গ মাসটাং সম্বন্ধে বলছিলেন,
“এই পৃথিবীর বুকে ঈশ্বরের সবচেয়ে চমৎকার সৃষ্টি।“
অবশ্যই, আমরা জানি যে উনি আসলে তা বোঝাতে চাননি,
কিন্তু এই মুহুর্তে এই দেশে, আপনি বেশী সতর্ক হতে পারবেন না।
(হাসি)
আমি একজন জীববিজ্ঞানী, আর আমাদের এই বিষয়ের মুল প্রতিপাদ্য বিষয়টি হল: সৃষ্টি তত্ত্ব ,
প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব।
সবজায়গায় পেশাজীবিদের মধ্যে, অবশ্যই এটি সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত।
আমেরিকার বাইরে অপেশাজীবিদের মধ্যে, বিষয়টি মুলত উপেক্ষীত।
কিন্তু আমেরিকায় অপেশাজীবি মানুষদের মধ্যে,
এত তীব্র বৈরিতা উদ্রেক করে বিষয়টি -
(হাসি)
- যে বললে ভুল হবে না যে, আমেরিকার জীববিজ্ঞানীরা একটা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছে ।
বর্তমানে খুবই দুশ্চিন্তার বিষয় এই যুদ্ধ,
সাথে আমেরিকার একের পর এক রাজ্যের আদালতে ক্রমাগত মামলা আসছে,
আমি মনে করি এ বিষয়ে আমার কিছু বলা উচিৎ।
আপনারা যদি জানতে চান ডারউইনবাদ বিষয়টি সম্বন্ধে আমার কি বলার আছে,
আমার ধারনা সেক্ষেত্রে আমার লেখা বইগুলো পড়ে দেখতে হবে আপনাদের,
যেগুলো বাইরের বইয়ের দোকানগুলোতে আপনারা খুজে পাবেন না।
(হাসি)
সাম্প্রতিককালের আদালতের মামলাগুলো
প্রায়শই ব্যস্ত সৃষ্টিবাদ বা ক্রিয়েশনিজমের তথাকথিত একটি নতুন সংস্করণ নিয়ে
যা পরিচিত ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন বা আই ডি হিসাবে।
বিভ্রান্ত হবেন না, আই ডি কিন্তু নতুন কোন কিছু না।
এটি কেবলমাত্র ভিন্ন নামে সৃষ্টিবাদ বা ক্রিয়েশনিজম।
পুনঃ নামকরন -- ভাবনা-চিন্তা করেই শব্দটা ব্যবহার করলাম --
(হাসি)
- কৌশলগত, রাজনৈতিক কারণের জন্য।
তথাকথিত আইডি তাত্ত্বিকদের যুক্তিগুলো
সেই একই পুরাতন সব যুক্তি, যা বার বার খন্ডন করা হয়েছে,
সেই ডারউইনের সময় থেকে আজ পর্যন্ত।
বিবর্তনবাদের জন্য কার্য্যকরী একটি লবী আছে
যারা বিজ্ঞানের পক্ষে সংগ্রামকে সংগঠিত করে,
এবং তাদের সাহায্য করার জন্য আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্ঠা করি,
কিন্তু তারা খুব বিচলিত বোধ করেন যখন আমার মত কেউ বলার জন্য সাহস করে
যে আমরা একই সাথে নাস্তিক এবং বিবর্তনবাদী।
আমাদেরকে তারা দেখেন সমস্যা তৈরীর কারন হিসাবে, কেন সেটা তো বুঝতেই পারছেন আপনারা।
সৃষ্টিবাদীরা, যাদের স্বপক্ষে সুস্পষ্ট বৈজ্ঞানিক যুক্তির অভাব আছে ,
তারাই নিরীশ্বরবাদের বিরুদ্ধে সাধারন ভীতির করনে সরে দঁাড়ান।
জীববিজ্ঞান ক্লাসে আপানাদের ছেলেমেয়েদের বিবর্তন তত্ত্ব শেখান,
আর তারা খুব শীঘ্রই মাদকদ্রব্য, চুরি-ডাকাতি আর যৌন বিকৃতির দিকে ঝুকে পড়বে।
(হাসি)
বাস্তবে, অবশ্য, পোপ থেকে শুরু করে শিক্ষিত ধর্মতাত্ত্বিকরা
বিবর্তন তত্ত্বের পক্ষে তাদের সমর্থনে দৃঢ়।
এই বইটি, কেনেথ মিলারের ”ফাইন্ডিং ডারউইন’স গড” (ডারউইনের ঈশ্বরের খঁোজে),
আমার জানা মতে ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকরী আক্রমন
এবং এটা আরো বেশী কার্যকরী কারন
বইটি লিখেছেন একজন ধর্মপ্রাণ খৃষ্টান।
কেনেথ মিলারের মত মানুষকে বলা যায়, বিবর্তনবাদ লবির জন্য একটি অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি --
(হাসি)
কারন আসল কথা হলো, তারা সেই মিথ্যাকে উন্মোচন করে যে, বিবর্তনবাদ,
নিরীশ্বরবাদের সমতুল্য।
অন্যদিকে আমার মত মানুষ, নাও নাড়াচ্ছে।
কিন্তু এখন, আমি সৃষ্টিবাদীদের সম্বন্ধে ভালো কিছু কথা বলতে চাই।
আমি সচরাচর এমন কিছু করি না, তাই খেয়াল করে শুনুন।
(হাসি)
আমি মনে করি তারা (সৃষ্টিবাদীরা) একটা ব্যপারে সঠিক।
আমার মনে হয়, তারা সঠিক যে বিবর্তনবাদ
মৌলিকভাবে ধর্মবিরুদ্ধ।
আমি ইতিমধ্যেই বলেছি যে, পোপের মত অনেক বিবর্তনবাদী ব্যাক্তিগতভাবে,
ধর্মপরায়নও, কিন্তু আমি মনে করি তারা নিজেদের বিভ্রান্ত করছেন।
আমি বিশ্বাস করি ডারউইনবাদের সঠিক উপলব্ধি
ধর্মীয় বিশ্বাসকে গভীর ভাবে ক্ষয় করে।
এখন, এমন মনে হতে পারে যে, আমি নিরীশ্বরবাদ প্রচার করতে যাচ্ছি,
আর আমি তাই আশ্বস্থ করতে চাই, আমি সেটা করতে যাচ্ছি না।
এরকম একটা সুশিক্ষিত,জ্ঞানী আর সুশীল দর্শকমন্ডলীর সামনে -
সেটা করলে তা চার্চের কয়ারের কাছে ধর্ম প্রচারের মত হবে।
না, আমি আপনাদের উপর যা চাপাতে চাইছি --
(হাসি)
এর বদলে আমি আপনাদের উপর যা চাপাতে চাইছি তা হলো জঙ্গী নিরীশ্বরবাদ।
(হাসি)
(হাত তালি)
কিন্তু খুব নেতিবাচক ভাবে বলা হয়ে গেল ব্যপারটা।
আমি যদি চাইতাম -- যদি আমি এমন কেউ হতাম যে ধর্মীয় বিশ্বাসকে রক্ষা করার ব্যাপারে উৎসাহী
বিবর্তনবাদীয় বিজ্ঞানের ইতিবাচক শক্তি নিয়ে সেক্ষেত্রে আমি খুবই শঙ্কিত থাকতাম,
সাধারনভাবে বিজ্ঞানের যে কোন শাখার জন্য, তবে বিশেষ করে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব,
যা পারে অনুপ্রাণিত আর বিস্মিত করতে, কারন সুনির্দিষ্টভাবে এটি নিরীশ্বরবাদী।
যাহোক, যে কোন জৈব সৃষ্টি তত্ত্বে সবচেয়ে কঠিন সমস্যাটি হলো
জীবিত সব কিছুর সুবিশাল পরিসংখ্যানীয় অসম্ভাব্যতাটাকে ব্যাখ্যা করা ।
ভালো নকশার সৃষ্টির দিকে পরিসংখ্যানের অসম্ভাব্যতা -
জটিলতা শব্দটি দিয়ে একে বোঝানো যেতে পারে।
সৃষ্টিবাদীদের সাধারণ যুক্তি - কেবল একটাই আছে, আর সব যুক্তি এই একজায়গায় শেষ হয়েছে -
যার শুরু একটি পরিসংখ্যানজনিত অসম্ভাব্যতা থেকে।
জীবিত প্রানীরা এতটাই জটিল, যে তাদের সৃষ্টি শুধুমাত্র ঘটনাক্রমে হয়নি;
সুতরাং অবশ্যই তাদের একজন সৃষ্টিকর্তা আছে।
এই যুক্তি অবশ্য নিজের পায়েই নিজে কুড়াল মারে।
কোন একজন সৃষ্টিকর্তা, যিনি সত্যিকারে কোন জটিল কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম
তার নিজেকে আরো বেশী জটিল হতে হবে, এবং তা আমরা কথা শুরু কারার আগেই হতে হবে
আমরা তঁার কাছে আর কী কী আশা করি সেই কথার আগেই।
যেমন পাপের ক্ষমা করা, বিয়েতে আশীর্বাদ করা, প্রার্থনা শোনা --
-- যুদ্ধে আমাদের পক্ষে সাহায্য করা --
(হাসি)
-- আমাদের যৌনজীবন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা এবং আরো অনেক কিছু।
(হাসি)
জীবের এই জটিলতার সমস্যা জীববিজ্ঞানের যে কোন তত্ত্বেরই সমাধান করতে হবে,
এবং সৃষ্টির চেয়ে জটিলতর একজন সৃষ্টিকর্তাকে অনুমান করে এর সমাধান করা সম্ভব না।
বরং এভাবেই সমস্যাটা আরো জটিল হয়ে উঠে।
ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন এত আকর্ষনীয়ভাবে অভিজাত
কারণ জটিলতার ব্যাখ্যা করার সমস্যাটির একটি সমাধান দেয়
নিতান্তই সরল উপায়ে।
মুলতঃ, বিবর্তনবাদ এ কাজটি করেছে একটি মসৃণ পথ প্রদর্শণের মাধ্যমে
যা ধাপে ধাপে জটিলতা বৃদ্ধি ব্যাখ্যা করে।
কিন্ত এখানে আমি শুধু বলতে চাই যে,
ডারউইনবাদের মার্জিত সৌন্দর্য্যই ধর্মকে ক্ষয়িষ্ণু করে তোলে
যেহেতু এটা এত মার্জিতভাবে সুন্দর, এত মিতব্যায়ী, এতই শক্তিশালী,
আর অর্থনৈতিকভাবে এত শক্তিশালী।
সুন্দর সাসপেনশন ব্রীজের মত দৃঢ়তা আছে এর।
ঈশ্বর তত্ত্ব শুধুমাত্র বাজে একটি তত্ত্বই না।
দেখা যাচ্ছে যে, নীতিগত ভাবে, এর যা করতে পারা উচিৎ তা করতেও এটা অক্ষম।
সুতরাং কৌশল আর বিবর্তন লবীর প্রসঙ্গে ফিরে আসি,
আমি যুক্তি দিতে চাই যে, বিবর্তন লবীর জন্য নাও নাড়ানোটাই ঠিক কাজ হবে।
আমার সৃষ্টিবাদীদের আক্রমনের পদ্ধতি বিবর্তন লবীর মত নয়।
আমার সৃষ্টিবাদীদের আক্রমনের পদ্ধতি হলো, পুরো ধর্ম জিনিসটাকেই আক্রমন করা,
আর, এখন আমার একটা বিশেষ নিষিদ্ধ ব্যপার স্বীকার করে নেয়া প্রয়োজন,
ধর্মের বিরুদ্ধে খারাপ কিছু বলার।
আমি সেই কাজটা করবো, প্রয়াত ডগলাস অ্যাডামস এর কথায়,
একজন প্রিয় বন্ধু, যদি TED এ সে কোনদিনও না এসে থাকে
অবশ্যই তাকে আমন্ত্রণ জানানো উচিৎ ছিল।
(রিচার্ড সল উরম্যান: উনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল)
রিচার্ড ডকিন্স : তিনি আমন্ত্রিত হয়েছিলেন, ভালো, আমিও ভাবছিলাম, তাকে নিশ্চয় আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।
তিনি তার এই বক্তব্য, যা কেমব্রিজে রেকর্ড করা হয়েছিল, শুরু করেছিলেন;
তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে।
তিনি শুরু করেন এই ব্যাখ্যা দিয়ে, বিজ্ঞান কিভাবে এমন সব হাইপোথিসিস প্রমাণ করে কাজ করে
যেগুলো ভুল প্রমাণিত হওয়ার ব্যপারে নাজুক - এরপর উনি বলতে থাকেন।
আমি তাঁকে উদ্ধৃত করছি, "ধর্ম সাধারণত এভাবে কাজ করে না বলে মনে হয়।
এর অন্তস্থলে কিছু মূল ধারণা আছে, যেগুলোকে আমরা বলি পবিত্র বা সমালোচনার উর্ধে।
যার অর্থ হচ্ছে, এটি একটি ধারণা বা চিন্তা
যার সম্বন্ধে আপনার কোন ধরণেরই খারাপ কিছু বলার অনুমতি নেই।
কোন ভাবেই না। কেন না? কারণ আপনার অনুমতি নেই ব্যাস।
(হাসি)
কেন এমন হবে যে রিপাবলিক্যান বা ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কোন একটি দলকে সমর্থন করা প্রশ্নাতীতভাবে ঠিক,
বা অর্থনীতির এই মডেল বনাম অন্যটা, উইন্ডোজ এর বদলে ম্যাকিনটোশ,
কিন্তু কেমন করে মহাবিশ্বের শুরু হল তা নিয়ে কোন মতামত থাকা,
যেমন কে সৃষ্টি করেছে এই মহাজগত -- না, এসব পবিত্র ব্যাপার।
সুতরাং ধর্মীয় মতামতগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে আমরা অভ্যস্থ নই
আর তাই ব্যপারটা খু্ব মজার হয়, রিচার্ডের কারনে এমন উন্মাদনা তৈরি হয়
যখন ও এই কান্ডটা করে।” (রিচার্ড বলতে উনি আমাকে বুঝিয়েছেন, উনাকে না)।
”প্রত্যেকে উন্মত্ত হয়ে যায় ব্যপারটা নিয়ে।
কারন আপনার এ্বইসব কিছু বলার কোন অনুমতি নেই, তারপরেও আপনি যদি যৌক্তিকভাবে দেখেন
কোন কারনই নেই, কেন ঐসব অভিমতগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্ক করা যাবে না
অন্য যে কোন বিষয়ের মত, শুধুমাত্র আমারা নিজেদের মধ্যে কোনভাবে একমত হয়েছি এবিষয়ে
এদের নিয়ে বিতর্ক করা যাবে না”, আর এখানেই শেষ ডগলাসের উদ্ধৃতিটা।
আমার মতে বিজ্ঞান শুধুমাত্র ধর্মের জন্য ক্ষতিকরই না,
ধর্মও বিজ্ঞানের জন্য ক্ষতিকর।
যা মানুষকে শেখায় তুচ্ছ, অতিপ্রাকৃত অপব্যাখ্যা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে
আর অন্ধ করে রাখে চমৎকার সত্যিকারের ব্যাখার প্রতি যা আমাদের নাগালের মধ্যেই আছে।
এটি কতৃত্ত্ব, বিশ্বাস আর দৈববানীকে মেনে নিতে শেখায়
প্রতিনীয়ত প্রমান চাইবার পরিবর্তে।
এই যে ডগলাস অ্যাডাম্স, তার “লাষ্ট চান্স টু সি“ বই থেকে নেয়া অপুর্ব একটা ছবি।
এখন এটা সাধারণ বৈজ্ঞানিক জার্র্নাল, দা কোয়ার্টারলী রিভিউ অব বায়োলজী।
অতিথি সম্পাদক হিসাবে, আমি সম্পাদনা করতে যাচ্ছি
একটি বিশেষ সংখ্যা এই প্রশ্নটি নিয়ে :“ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল কি কোন উল্কাপিন্ড“
আর এর প্রথম রচনাটা একটি প্রামান্য বৈজ্ঞানিক গবেষনা পত্র
যা প্রমান উস্থাপন করবে: “ কে - টি বাউন্ডারীতে ইরিডিয়ামের স্তর“ ।
ইউকাটানে পটাশিয়াম - আর্গন জ্বালামুখ,
ইঙ্গিত দেয় যে , একটা উল্কাপিন্ড ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল।
খুব সাধারন একটা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ।
এবার পরবর্তীটা, রয়্যাল সোসাইটির সভাপতি
দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নিয়ে শপথ করে বলেছেন - (হাসি) --
যে .. “ একটা উল্কাপিন্ড ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল“
(হাসি)
অধ্যাপক হাক্সটেনের কাছে ব্যক্তিগতভাবে গোপনে প্রকাশ পেয়েছে যে,
যে .. “ একটা উল্কাপিন্ড ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল
(হাসি)
অধ্যাপক হোর্ডলী বড় হয়েছেন
সম্পুর্ন এবং প্রশ্নাতীত বিশ্বাসের সাথে --
(হাসি)
যে .. “ একটা উল্কাপিন্ড ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল “
অধ্যাপক হকিন্স প্রচার করেছেন একটি আনুষ্ঠানিক মতবাদ
সকল অনুগত হকিন্সিয়ানদের অবশ্যই মানার নির্দেশ দিয়ে
যে .. “ একটা উল্কাপিন্ড ডায়নোসরদের হত্যা করেছিল “
(হাসি)
অবশ্যই এটা গ্রহণযোগ্য না।
কিন্তু ধরুন -
(হাত তালি)
-- ১৯৮৭ সালে এক সাংবাদিক জর্জ বুশ (সিনিয়র) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন
তিনি কি স্বীকার করেন সমান নাগরিকত্ব আর দেশপ্রেম আছে
আমেরিকার নাস্তিকদের।
জনাব বুশের উত্তর কুখ্যাতি লাভ করেছে।
না, আমি জানি না যে, নাস্তিকরা নাগরিক হিসাবে
বা দেশপ্রেমী হিসাবে বিবেচনা পেতে পারে কিনা।
ঈশ্বরের অধীনে এটা এক জাতি“।
বুশের গোড়ামী কোন বিচ্ছিন্ন ভুল ছিল না,
যা কিনা হঠাৎ মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে এবং পরে প্রত্যাহার করে নেয়া হল।
বার বার এর ব্যাখ্যা বা মন্তব্য প্রত্যাহার করার কথা বলার পরও তিনি তার অবস্থানে ন্থির ছিলেন।
তিনি আসলে সেইটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন।
আরো একটি বিষয় হলো, তিনি জানতেন তার এই মস্তব্য নির্বাচনের জন্য কোন হুমকি হয়ে দঁাড়াবেনা বরং উল্টোটা হবে।
ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান দুই দলই তাদের ধর্মপ্রীতি প্রদর্শন করে
যদি তাদের নির্বাচনে জিততে হয়। দুই দলই ঈশ্বরের অধীনে এক জাতি স্লোগান দেয়।
টমাস জেফারসন এদের সম্বন্ধে কি বলতেন ?
ঘটনাক্রমে, আমি যদিও ব্রিটিশ হিসাবে খুব বেশি গর্ব বোধ করিনা,
কিন্তু আপনি তুলনা না করে পারবেন না।
(হাত তালি)
ব্যবহারিক ক্ষেত্রে একজন নাস্তিক আসলে কে?
একজন নাস্তিক হচ্ছে এমন কেউ যিনি ‘ইয়াওয়ে‘ সম্বন্ধে যেমন ভাবেন
সেটা, ‘থর‘ অথবা ‘বাল‘ অথবা ‘সোনার বাছুর‘ সম্বন্ধে যে কোন ভদ্র খৃষ্টান যা ভাবে, সেরকমই।
আগে যেমনটা বলেছি, প্রায় বেশীর ভাগ দেবতাদের ক্ষেত্রে আমরা সবাই নাস্তিক
যাদের মানবজাতি কখনো বিশ্বাস করেছে। কেউ কেউ কেবল আরেকজন ঈশ্বর যোগ করেছে অবিশ্বাসের তালিকায়
(হাসি)
(হাত তালি)
এবং যেভাবেই আমরা নিরীশ্বরবাদকে সংঙ্গায়িত করিনা কেন, অবশ্যই এটা একধরনের তাত্ত্বিক বিশ্বাস
এই বিশ্বাস ধারন করার অধিকার আছে যে কারো,
অ-দেশপ্রেমিক, নির্বাচন অযোগ্য অ-নাগরিক হিসাবে চিহ্নিত না হয়ে।
তাসত্ত্বে অনস্বীকার্য্য সত্যটি হলো, নিজেকে নাস্তিক হিসাবে দাবী করা
মানে নিজেকে মিঃ হিটলার অথবা মিস বিলযেবাব হিসাবে পরিচয় দেবার মতন।
এবং এর উৎস নাস্তিকদের সম্বন্ধে ধারনা
যে তারা কোন এক ধরনের আজব, অগতানুগতিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
নিউ ইয়র্কার - এ নাটালি আনজিয়ার একটি বিষণ্ণ লেখা লিখেছিলেন,
একজন নাস্তিক হিসাবে তিনি নিজেকে কতটা একাকী মনে করেন।
স্পষ্টত তিনি নিজেকে অবরুদ্ধ সংখ্যালঘুদের দলে মনে করেন।
কিন্ত আসলেই সংখ্যার দিক থেকে আমেরিকার নাস্তিকদের অবস্থান কোথায়?
সাম্প্রতিক জরিপ কিন্তু বিস্ময়করভাবে আশাব্যাঞ্ছক তথ্য দিচ্ছে।
খৃষ্টানধর্ম, অবশ্যই জনসংখ্যার সিংহভাগ জুড়ে আছে
প্রায় ১৬০ মিলিয়নের কাছাকাছি।
কিন্তু আপনাদের কী মনেহয়, দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রুপটি কাদের হতে পারে
সহজাতভাবে সংখ্যাগুরু ২.৮ মিলিয়ন ইহুদী, ১.১ মিলিয়ন মুসলিম,
হিন্দু, বৌদ্ধ আর অন্য সব ধর্মাবলম্বীদের মোট সংখ্যাকে পেছনে ফেলে?
দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রুপটি, প্রায় ৩০ মিলিয়ন,
যারা নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মপালনকারী না হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
আপনারা নিশ্চয়ই ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন কেন ভোটপ্রার্থী রাজনীতিবিদরা
প্রবাদতুল্যভাবে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে যেমন ইহুদী লবীর ক্ষমতার
মনে হয় যে, ইসরায়েলের অস্তিত্ত্বটাই নির্ভর করছে
আমেরিকার ইহুদী ভোটের উপর, আবার একই সাথে
ধর্মপালন না - কারীদের রাজনৈতিক বিস্মৃতির দিকে ঠেলে দিয়ে।
এই ধর্মনিরপেক্ষ ভোট , যদি ঠিকমতো সংগঠিত করা যেত,
তা ইহুদী ভোটের নয় গুন বেশী হত।
তাহলে কেন অনেক উল্লেখযোগ্য আকারের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়
কোন উদ্যোগ নেয় না তার রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহারের?
বেশ, সংথ্যার কথা থাক, গুনগত দিক থেকে?
কোন কি সম্পর্ক আছে, ইতিবাচক বা নেতিবাচক,
বুদ্ধিমত্তা আর ধার্মিক হওয়ার প্রবণতায়?
(হাসি)
যে জরিপের কথা বলছি তা হল ARIS জরিপ,
তারা তাদের তথ্য আর্থসামাজিক অবস্থা বা শিক্ষা
আই কিউ বা অন্যকিছু অনুযায়ী ভাগ করেনি,
কিন্তু মেনসা পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত প্রবন্ধে পল জি বেল
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মেনসা, আপনারা জানেন, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা
যার সদস্য হলো উচু আইকিউ সম্পন্নরা।
বিভিন্ন প্রকাশিত প্রবন্ধের একটি মেটা সমীক্ষায়
বেল এই বলে শেষ করেন যে, ‘১৯২৭ থেকে এপর্যন্ত করা মোট ৪৩টি গবেষণায়
বুদ্ধিমত্তা বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে ধর্মবিশ্বাসের সম্পর্ক
শধুমাত্র ৪টি ছাড়া বাকী সবগুলো গবেষনায় উল্টা সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তার মানে, যার বুদ্ধিমত্তা অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতা যত বেশী,
তার ধার্মিক হবার সম্ভাবনা তত কম।
বেশ, আমি সেই মুল ৪২ টা মুল প্রবন্ধ পড়িনি এবং মেটা-সমীক্ষা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারছি না
কিন্তু এ ধরনের আরো কিছু গবেষনা হোক তা আমি অবশ্যই চাই।
আর আমি জানি, আমি যদি এখানে একটু যোগাযোগ করি
দর্শকদের মধ্যে অনেককেই পাওয়া যাবে যঁারা
অনায়াসে এই প্রশ্নের সমাধানে একটা বড় আকারের গবেষণার জন্য অর্থসাহায্য করার ক্ষমতা রাখেন,
ব্যাপারটা গুরুত্বপুর্ন বলে প্রস্তাবটা তুললাম।
আপনাদের কিছু পরিসংখ্যান জানানো যাক
যা যথার্থভাবে প্রকাশিত এবং বিশ্লেষিত হয়েছে
একটি বিশেষ গ্রুপের মধ্যে, বলতে গেলে, প্রখ্যাত বিজ্ঞানীরা
১৯৯৮ সালে লারসন এবং উইথাম
আমেরিকার সেরা বিজ্ঞানীদের উপর একটা জরিপ চালায়।
যারা ন্যাশনাল একাডেমী অফ সায়েন্স এর সদস্য নির্বাচিত হবার সন্মান অর্জণ করেছেন।
আর এই বিশেষ গ্রুপের মধ্যে
ব্যক্তিগত ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস একেবারে নেমে শতকরা সাত ভাগে পৌছেছে।
প্রায় শতকরা ২০ ভাগ অ্যাগনষ্টিক বা অজ্ঞাবাদী আর বাকীদের নিরপেক্ষভাবে বলা যেতে পারে নাস্তিক।
ব্যাক্তিগত অমরতা নিয়ে প্রায় একই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।
জীববিজ্ঞানের বিজ্ঞানীদের মধ্যে এই সংখ্যা আরো নীচে।
শতকরা ৫.৫ ভাগ মাত্র ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস করেন, পদার্থ বিজ্ঞানীদের মধ্যে এটা মাত্র ৭.৫ ভাগ।
আমি অন্যান্য ক্ষেত্রের বিদ্বান পন্ডিতদের মধ্যে এই সংখ্যাগুলো দেখিনি
অন্য বিষয়গুলো যেমন ইতিহাস অথবা দর্শন।
কিন্তু আমি অবাক হবো তাঁদেরটা যদি এর চেয়ে আলাদা হয়।
সুতরাং, আমরা একটা সত্যিকারের উল্লেখযোগ্য অবস্থানে পৌছেছি।
একটা অদ্ভুত অসামন্জ্ঞস্য আমেরিকার বুদ্ধিজীবি
আর আমেরিকার ভোটারদের মধ্যে
মহাজগতের প্রকৃতি সম্বন্ধে যে দার্শনিক মতামত
সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেষ্ঠ আমেরিকান বিজ্ঞানীরা ধারন করেন
এবং সাধারনভাবে সম্ভবত বেশীরভাগ বুদ্ধিজীবিরাও তাই,
তা আমেরিকার ভোটারদের কাছে এত বেশী ঘৃণ্য
যে সাধারন নির্বাচনে কোন প্রার্থী জনগনের কাছে তা স্বীকার করার সাহস পান না।
যদি আমি ঠিক হয়ে থাকি, তার অর্থ দাড়ায় যে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম দেশটিতে সবচেয়ে উচু প্রতিষ্ঠানটিতে,
যারা দেশটি সবচেয়ে ভালোভাবে চালাতে পারতো তাদেরই প্রবেশাধিকার নেই, বুদ্ধিজীবি সমাজ,
যতক্ষণ না তারা তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে মিথ্যা বলতে প্রস্তুত
সহজ ভাষায় আমেরিকার রাজনৈতিক সুযোগগুলো
খুব বেশীভাবে পক্ষপাতদুষ্ট
যারা একই সাথে বুদ্ধিমান আর সৎ তাদের বিরুদ্ধে।
(হাত তালি)
আমি এই দেশের নাগরিক নই, তাই আশা করি যে ব্যপারটা অশোভন ভাবা হবে না
যদি আমি প্রস্তাব করি যে, কিছু একটা করতে হবে।
(হাসি)
আর আমি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছি সেই জিনিসটা আসলে কী।
আমি TED এর যতটুকু দেখেছি, আমি মনে করি শুরু করার জন্য এটাই আদর্শ জায়গা
আবার, এর জন্য প্রয়োজন অর্থ
আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন
আমেরিকার নাস্তিকদের প্রকাশে্য বেরিয়ে আসার জন্য প্রচারণা প্রয়োজন।
(হাসি)
সমকামীদের সংগঠিত করার প্রচারণার মত হতে পারে সেটা
কয়েক বছর আগে
যদিও আমরা আদৌ চাই না মানুষকে জোর করে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে
নিজেদের প্রকাশ করতে।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে যারা নিজেরা ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছেন
তারা ঐ ভ্রান্তধারনা ভেঙ্গে দিতে সহায়তা করবে যে, নাস্তিকদের নিশ্চয়েই কোন সমস্যা আছে।
বরং উল্টোটাই,
তারা প্রমান করবে যে, অনেক সময় নাস্তিকরা সেই ধরনের মানুষ
যারা আপনাদের সন্তানদের জন্য ভালো অনুকরনীয় হতে পারে
এমন ধরনের মানুষ যাকে বিজ্ঞাপনের নির্মাতারা তাদের দ্রব্য বিক্রি করার জন্য ব্যবহার করতে পারে
সেই ধরনের মানুষ যারা এই রুমে বসে আছেন।
পুরো ব্যপারটা স্নোবল ইফেক্টের মত হবে - একটা ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে,
যেমন যত নাম আমরা পাবো, আরো বেশী আমরা সংখ্যায় বাড়বো।
নন-লিনিয়ারিটি বা থ্রেসহোল্ড ইফেক্ট হতে পারে বটে।
এই সংখ্যা যখনই একটা ক্রান্তিক সংখ্যা উত্তির্ণ করবে,
তখন দ্রুত যোগদানেকারীর সংখ্যাও বেড়ে যাবে আনুপাতিক হারে।
আর আবারো , এর জন্য দরকার অর্থ।
আমার সন্দেহ ”নাস্তিক” শব্দটাই
এখনও একটা প্রতিবন্ধক
এর অর্থ আসলে যা তার থেকে অনেক বেশী আমাদেরকে আক্রান্ত করে এবং প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে
না হলে অনেকেই আনন্দের সাথে নিজেদের নিরীশ্বরবাদি হিসেবে প্রকাশ করতেন।
তাহলে, পথটাকে মসৃন করতে অন্য কি শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে,
চাকায় তেল দিতে, বা তেতো ট্যাবলেটকে মিষ্টি করতে? ডারউইন নিজে অ্যাগনষ্টিক শব্দটিকে পছন্দ করতেন --
তা কিন্তু শুধুমাত্র বন্ধু হাক্সলীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য না, যিনি শব্দটা প্রখম ব্যবহার করেছিলেন।
ডারউউন বলেছিলেন, ”আমি কখনোই নাস্তিক ছিলাম না
যে অর্থে ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব অস্বীকার করে নাস্তিকরা,
আমি মনে করি এটা অ্যাগনষ্টিক বা অজ্ঞেয়বাদী
আমারা মানসিক অবস্থার সবচেয়ে ভালো বর্ণনা হিসেবে বলা যেতে পারে।”
এমনকি তিনি তার স্বভাবের বাইরে এডওয়ার্ড অ্যাভেলিং এর প্রতি বেশ বিরক্ত ছিলেন।
অ্যাভেলিং ছিলেন একজন জঙ্গী নাস্তিক
যিনি ডারউইনকে রাজী করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন
নিরীশ্বরবাদ সম্পর্কে তার একটি বইয়ের উৎসর্গ গ্রহন করতে -
ঘটনাচক্রে, এটা একটা মজার রটনার সৃষ্টি করেছে
যে কার্ল মার্কস তার “দাস ক্যাপিটাল” ডারউইনকে উৎসর্গ করার চেষ্টা করেছিলেন,
যা তিনি করেননি, আসলে তা করেছিলেন এডওয়ার্ড অ্যাভেলিং
যা হয়েছিল তা হলো এডওয়ার্ড অ্যাভেলিং এর মিস্ট্রেস ছিলেন মার্কস এর মেয়ে,
এবং যখন ডারউইন এবং মার্কস দুজনেই মারা যান
মার্কস এর কাগজপত্র অ্যাভেলিং এর কাগজপত্রের সাথে মিশে গিয়েছিল
এবং ডারউইনের চিঠি যেখানে লেখা ছিল,” প্রিয় মহোদয়, অনেক ধন্যবাদ,
তবে আমি চাইনা আপনি আপনার বইটি আমার নামে উৎসর্গ করেন “
ভুলবশত ধারনা করা হয়েছিল চিঠিটা মার্কস -এর উদ্দেশ্যে লেখা ।
আর সেটাই এই পুরো ঘটনার জন্ম দেয়, যা আপনারা হয়ত আগেও শুনে থাকতে পারেন।
এটা অনেকটা শহুরে গুজবের মত,
যে মার্কস চেষ্টা করেছিলেন ’ দাস ক্যাপিটাল’ ডারউইনকে উৎসর্গ করতে।
যাই হোক, এটা করেছিলেন এডওয়ার্ড অ্যাভেলিং, এবং তাদের দেখা হলে ডারউেইন তাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
”কেন আপনারা আপনাদেরকে নাস্তিক বলেন?”
অ্যাভেলিং মন্তব্য করেছিলেন ’‘অ্যাগনিষ্টিক'রা আসলে নাস্তিক, যারা সন্মান পাবার জন্য আর্জি জানাচ্ছেন,
আর নাস্তিকরা হচ্ছেন আসলে অ্যাগনিষ্টিক যারা আক্রমনাত্মক হতে চান।”
ডারউইন অভিযোগ করেছিলেন, ”কিন্ত আপনাদের কেন এমন আক্রমনাত্মক হতে হবে?”
ডারউইন ভাবতেন যে, নিরীশ্বরবাদ বুদ্ধিজীবি সমাজের জন্য খারাপ কিছু না বরং হয়ত ভালো,
তবে তা সাধারন মানুষ এর জন্য, তার উদ্ধৃতি ‘উপযুক্ত না।’
যা অবশ্যই, আমাদের পুরাতন বন্ধু, "নৌকা না নাড়ানোর" যুক্তি।
আমাদের জানা নেই,অ্যাভেলিং ডারউইনকে বলেছিলেন কিনা, আরেকটু বিনয়ী হতে।
(হাসি)
কিন্তু যাই হোক, ব্যপারটা ১০০ বছর আগের।
আপনারা ভাবেছেন, সেই সময় থেকে আমরা বড় হয়েছি।
এবার আমার এক বন্ধুর কথা বলি, একজন বুদ্ধিমান স্খলিত ইহুদী,
যে মাঝে মাঝে সাবাথ পালন করে
কেবল সাংস্কৃতিক সৌহার্দের খাতিরে
নিজেকে ব্যাখ্যা করেন একজন ‘টুথ ফেয়ারী অ্যাগনষ্টিক” হিসাবে।
তিনি নিজেকে একজন নাস্তিক বলে পরিচয় দিতে চান না
কারণ, নীতিগতভাবে, ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব প্রমান করা অসম্ভব,
কিন্ত অ্যাগনষ্টিক নিজের খাতিরেই প্রস্তাব করে, ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব
বা অস্তিত্ত্বহীনতা সমানভাবে সম্ভব।
সুতরাং আমার বন্ধু কঠোরভাবে একজন টুথ ফেয়ারী অ্যাগনষ্টিক,
কিন্তু ব্যপারটা ঠিক একরকম না, তাই না? ঈশ্বরের মত,
সেজন্যই ‘টুথ ফেয়ারী অ্যাগনষ্টিক’ বাক্যটা।
কিন্তু বার্ট্রান্ড রাসেল একই প্রস্তাব করেছিলেন
মঙ্গল গ্রহের চারপাশে প্রদক্ষিনরত কাল্পনিক ’চায়ের পট’ রপক ব্যবহার করে
আপনাকে কঠোরভাবে অজ্ঞেয়বাদী হতে হবে
মঙ্গল গ্রহের চারপাশে প্রদক্ষিনরত কাল্পনিক চায়ের পট আছে কিনা সে বিষয়ে।
কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এর অস্তিত্ত্বর সম্ভাব্যতাটিকে
অস্তিত্ত্বহীনতার মত একই ভাবে দেখতে হবে।
যে সব বিষয় নিয়ে আমাদেন কঠোরভাবে অ্যাগনষ্টিক হতে হবে তার তালিকা
কিন্তু টুথ ফেয়ারী বা চায়েরপটেই শেষ হয়ে হয়নি, এ তালিকা অসীম।
যদি আপনি তাদের কোন একটাকে বিশ্বাস করতে চান,
ইউনিকর্ন বা টুথ ফেয়ারী বা চায়ের পট বা ইয়াওয়ে ,
কেন বিশ্বাস করবেন তা প্রমান করার দায়িত্ব আপনার উপর বর্তায়
বাকী আমাদের উপর কোন দায়িত্ব নেই কেন না তা প্রমান করার জন্য
আমরা, যারা নাস্তিক, তারা ফেয়ারী অবিশ্বাসী আর চায়েরপট অবিশ্বাসী,
(হাসি)
কিন্ত তা বলার জন্য আমরা আদৌ উৎসাহী নই।
আর সেজন্য আমার বন্ধু টুথ ফেয়ারী অ্যাগনষ্টিক শব্দটি ব্যবহার করেছে
যা বেশীর ভাগ মানুষ নাস্তিক বলবে তার একটি প্রতিনাম হিসাবে।
তাসত্ত্বেও আমরা যদি আত্মগোপন করে রাখা নাস্তিকদের প্রকাশ্যে বের হয়ে আসার জন্যে উৎসাহিত করতে চাই,
আমাদের আরো ভালো কিছু খুঁজে বের করতে হবে
টুথ ফেয়ারী বা চায়ের পট অ্যাগনষ্টিক ছাড়া আমাদের ব্যানারে কিছু লেখার জন্য
সুতরাং, ’হিউমানিষ্ট’ হলে কেমন হয়
এর সুবিধা হল সারাবিশ্ব জুড়ে এদের সুসংগঠিত নেটওয়ার্ক আছে
এছাড়া জার্নাল আর অন্য সব কিছুই আছে জায়গামত
আমার সমস্যা আপাত দৃষ্টিতে শুধুমাত্র এর মানবজাতি কেন্দ্রিকতা।
ডারউইনের কাছ থেকে আমরা একটা জিনিস শিখেছি
যে মানবজাতিই কি শুধুমাত্র একটা প্রজাতি
কাছের বা দুরের আত্মিয় মিলিয়ে মিলিয়ন সংখ্যক জ্ঞাতিগোষ্ঠীর মধ্যে।
আরো কিছু সম্ভাবনাময় শব্দ আছে যেমন ন্যাচারালিষ্ট,
কিন্তু এখানেও সমস্যা আছে সংশয়ের ,
কারন ডারউইনকে ভাবা যেতে পারতো একজন ন্যাচারালিষ্ট
ন্যাচারালিষ্ট এর অর্থ অবশ্যই অতিপ্রাকৃতবাদীর বীপরিত।
এবং এটা মাঝে মাঝে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
ডারউইন নিজে হয়ত সন্দেহের মধ্যে পড়ে যেতেন ন্যাচারালিষ্ট এর অন্য অর্থ সম্বন্ধে
যা অবশ্যই তিনি ছিলেন এবং আমার ধারনা কেউ কেউ আছেন
যারা একে ’নগ্নতাবাদ’ এর সাথে বিভ্রান্ত করে ফেলতে পারেন।
(হাসি)
এই ধরনের মানুষ হয়তো ঐ উন্মত্ত ব্রিটিশ জনতার অংশ হতে পারে
যারা গত বছর একজন ’পেডিয়াট্রিশিয়ান’কে আক্রমন করেছিল ’পেডোফিল’ ভেবে
(হাসি)
আমার ধারনা সবচেয়ে ভালো বিকল্প হলো - অ-ঈশ্বরবাদী।
এটার ঐ কঠিন ভাবটা নেই যে, নিঃসন্দেহে কোন ঈশ্বর নেই
আর তাই সহজেই টুথ ফেয়ারী বা চায়েরপট অ্যাগনষ্টিকরা একে গ্রহণ করতে পারেন
পদার্থবিদদের ঈশ্বরদের সাথে সম্পুর্নভাবে সামনজ্ঞস্য পূর্ণ।
যখন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব - যেমন নাস্তিক -
স্টিফেন হকিং বা আলবার্ট আইনস্টাইন এর মত মানুষরা ‘ঈশ্বর’ শব্দটি ব্যবহার করেন
অবশ্যই সংক্ষিপ্ত রুপকার্থে
পদার্থরবিজ্ঞানের সেই গভীর, রহস্যময় অংশকে বোঝাতে, যা আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি।
এসবের জন্য অ - ঈশ্বরবাদী শব্দটাই ভালো কাজ করবে, নাস্তিক শব্দটার মত
এই শব্দটার বিরুদ্ধে একই রকম আতঙ্ক বা উন্মত্ত্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
কিন্তু আমি মনে করি আসলে, বিকল্প উপায়টি হল
নাস্তিক শব্দটা নিয়ে সমস্ত পৃথিবীর এত জ্বলনের কারনটাকে ভালোভাবে বোঝা,
সুস্পষ্টতভাবে কারণ, এটি একটি নিষিদ্ধ শব্দ
যা উন্মত্ত্ব আতঙ্কের রোমহর্ষক শিহরণ বহন করে।
সেকারনে নাস্তিক শব্দটি দিয়ে সচেতন জনগষ্ঠি তৈরী করা বেশী কঠিন হতে পারে
অ-ঈশ্বরবাদী শব্দটির তুলনায়,
বা অন্য কোন অবিতর্কিত শব্দের তুলনায়
কিন্তু যদি আমরা সফল হই ঐ ভয়ঙ্কর 'নাস্তিক', শব্দটি দিয়েই,
এর রাজনৈতিক প্রভাব হবে আরো ব্যপক।
আমি আগেই বলেছি, যদি আমি ধর্মানুসারী হতাম, আমি বিবর্তনবাদকে ভয় করতাম, আরেকটু বললে,
যদি সঠিকভাবে বুঝতাম, তাহলে সাধারনভাবে বিজ্ঞানকেই ভয় পেতাম
কারন, বিশ্ব সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী
অনেক বেশী উত্তেজনাময়, অনেক বেশী কাব্যিক,
যে কোন কিছুর চাইতে অনেক বেশী বিস্ময়কর
ধর্মীয় কল্পনার দারিদ্রপীড়িত ভান্ডারের যে কোন কিছুর চেয়ে।
সম্প্রতি প্রয়াত আরেকজন বীর, কার্ল সাগান, যেমন বলেছিলেন,
কেন এমন হল,যে কোন প্রতিষ্ঠিত ধর্মই বিজ্ঞানকে বোঝার চেষ্টা করেছে
এবং অনুধাবন করেছে সিদ্ধান্তে পৌছেছে, ”আমরা যা ভেবেছি এটাতো তার চেয়ে আরো ভালো !
মহাবিশ্ব আমাদের নবী যা বলেছেন তার চেয়ে অনেক বিশাল,
অনেক সুক্ষ , অনেক সুন্দর ?” তার বদলে তারা বরেছে, না , না , না !
আমার ঈশ্বর ক্ষুদ্র ঈশ্বর, আমি চাই সে এরকমই থাকুক।
নতুন কিংবা পুরাতন, কোন ধর্ম
যা মহাবিশ্বের চমৎকারিত্বর উপর জোর দিয়েছে
বিজ্ঞান যা উন্মুক্ত করেছে
হয়তো আরো বেশী শ্রদ্ধা আর মুগ্ধতা আদায় করে নিতে পারতো
যা সাধারন বিশ্বাস আদৌ ছুতে পারেনি
এখন এখানে আছেন একদল এলিট শ্রতা,
তাই আমি আশা করতে পারি আপনাদের মধ্যে শতকরা ১০ ভাগ ধার্মিক,
আপনাদের অনেকেই সম্ভবত: আমাদের ভদ্র সামাজিক বিশ্বাসকে মেনে চলেন যে, ধর্মকে আমাদের শ্রদ্ধা করা উচিৎ
কিন্তু আমি সন্দেহ করি, এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক
গোপনে হয়তো আমার মতই ঘৃণা করেন ধর্মকে,
(হাসি)
যদি আপনি তাদের একজন হন, অবশ্যই আপনাদের মধ্যে অনেকে তা না
কিন্তু আপনি যদি তাদের একজন হন, আমি আপনাকে বলছি, ধর্ম বিষয়ে বিনয়ী হওয়া বন্ধ করুন,
জনসমক্ষে আপনার বিশ্বাস নিয়ে বের হয়ে আসুন, আর আপনি যদি ঘটনাক্রমে বিত্তশালী হয়ে থাকেন
কিছু সময় দিন ভাববার, কিভাবে আপনি এই লক্ষ্যে কিছু অবদান রাখতে পারেন।
এই দেশে ধর্মবিশ্বাসীদের লবী
বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে যথেষ্ট অর্থসাহায্যপুষ্ট, কর সুবিধার কথা তো বাদই দিলাম
ফাউন্ডেশন যেমন টেম্পলটন ফাউন্ডেশন আর ডিসকভারী ইন্সটিটিউট
আমাদের সামনে অগ্রসর হতে টেম্পলটন বিরোধী কিছু লাগবে।
আমার বই যদি স্টিফেন হকিং এর বই এর মত বিক্রি হতো
রিচার্ড ডকিন্স এর বই এর মত বিক্রি না হয়ে, আমিই সেটা করতাম।
অনেকেই বলে, ”১১ সেপ্টেম্বর আপনাকে কতটুকু বদলে দিয়েছে?”
বেশ, আমাকে বদলে দিয়েছে এভাবে।
আসুন সবাই অতিরিক্ত শ্রদ্ধাশীল হওয়া বন্ধ করি।
আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
(হাত তালি)