Tip:
Highlight text to annotate it
X
(গান)
এই বৃহৎ মহাবিশ্বের কোথাও না কোথাও
অন্য অনেক গ্রহ নিশ্চয়ই আছে, যা জীবন দিয়ে ভরপুর,
কিন্তু কেন আমরা তা দেখতে পাই না?
এই নিয়ে এনরিকো ফার্মির ১৯৫০ সালে দেওয়া একটা উক্তি আছে
"সবাই কোথায়?"
ষড়যন্ত্র তাত্তিকরা বলে ইউএফও-রা সবসময়ই ঘুরে যাচ্ছে এ বিশ্ব
আর সে খবরগুলো ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে,
কিন্তু সত্যি বলতে সেগুলো আসলে ততটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
কিন্তু সেটা একটা ধাধাঁর জন্ম দেয়।
গেল বছরগুলোতে কেপলার মানমন্দির
নিকটবর্তী তারাগুলোর কাছে শত শত গ্রহ খুঁজে পেয়েছে,
আর আপনি যদি সেই উপাত্তের হিসেবে কল্পনা করে দেখেন,
তাহলে দেখা যাবে এমন ১০ হাজার কোটি গ্রহ আছে
শুধুমাত্র আমাদের ছায়াপথে।
যদি প্রতি ১০,০০০ এর মধ্যে একটিতে এমন আবহাওয়া থাকে
যার মধ্য দিয়ে জীবনের সৃষ্টি হয়, তারপরেও
অন্তত ৫০ লক্ষ গ্রহ পাওয়া যাবে যাতে জীবন-উপযোগী উপাদান থাকতে পারে
এবং তা শুধু মিল্কিওয়েতেই!
ধাধাঁটা এখানেই
আমদের পৃথিবী বিগ ব্যাং এর ৯ লক্ষ কোটি বছর পরে গঠিত হয়েছে
অথচ যে অগণিত তারা আছে আমাদের ছায়াপথে
সেগুলো অনেক আগেই গঠিত হবার কথা এবং সেগুলোতে জীবন সৃষ্টির সম্ভাবনা আছে
পৃথিবীর চেয়ে কোটি, অথবা
অন্তত অনেক লক্ষ বছর আগে।
যদি তাদের মাঝে অল্প কিছুও বুদ্ধিমান জীবের জন্ম দেয়
এবং সেগুলো বিভিন্ন প্রযুক্তির সৃষ্টি করে,
তাহলে সে প্রযুক্তি ১০ লক্ষ বছরের মত সময় পাবে
আর জটিলতর এবং আর ক্ষমতার অধিকারী হতে!
আমাদের পৃথিবীতে আমরা দেখেছি
কি করে চমকপ্রদভাবে
প্রযুক্তি গত ১০০ বছরে এগিয়ে গেছে!
১০ লক্ষ বছরের মাঝেই, একটা উন্নত ভিনগ্রহের সভ্যতা
একটা ছায়াপথের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে,
হয়ত তৈরি করতে বিশাল শক্তি সঞ্চয়ী যন্ত্র
কিংবা বসতস্থাপনকারী স্পেসশীপের বহর
অথবা রাতের আকাশ ছবি এঁকে ভরিয়ে ফেলতে পারে।
অন্তত আপনি আশা করবেন যে তারা তাদের অস্তিত্ত জানান দেবেই
নিজ থেকে অথবা অন্য কোন ভাবে
সাধারন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিগনালের মাধ্যমে
অথবা অন্য কোন উপায়ে! অথচ আমরা বিশ্বাসযোগ্য কোন প্রমাণ দেখতে পারছি না।
কিন্তু কেন?
এর বিভিন্ন উত্তর হতে পারে!
এগুলোর মধ্যে কিছু রহস্যময়!
হতে পারে একটি দারুন রকমের বুদ্ধিমান সভ্যতা
আমাদের ছায়াপথ অধিকার করে ফেলেছে
এবং সেই সাথে কঠোরভাবে যোগাযোগবিহীনভাবে বসবাস করছে
কারন তারা হয়ত ভয় পায় কোন প্রতিযোগী সভ্যতার ব্যাপারে।
তারা হয়ত কোথাও বসে আছে ধ্বংস করার জন্য
যদি কেউ হুমকি স্বরূপ হয়ে দাড়াঁয়।
কিংবা তারা হয়ত অতটা বুদ্ধিমান নয়,
অথবা হয়ত বুদ্ধিমত্তার যে বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
উন্নততর প্রযুক্তি তৈরি করার সামর্থ্য জন্মায়,
তা হয়ত অনেক বেশি দূর্লভ আমাদের ভাবনার চেয়েও।
এই যেমন, আমাদের পৃথিবীতে তা হয়েছে মাত্র ৪শ কোটি বছর আগে।
হয়ত আমরা অনেক বেশি ভাগ্যবান!
হতে পারে আমরা আমাদের ছায়াপথের প্রথম সে রকম সভ্যতা।
অথবা এমনটা হতে পারে যে, সভ্যতাগুলোই
তার নিজেকে ধ্বংস করার বীজ নিয়ে চলে
তার নিজস্ব সৃষ্টিগুলো নিজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারার অক্ষমতার কারনে।
তবে এর কিছু আশাব্যঞ্জক উত্তরও আছে।
যেমন ধরুন, আমরা কিন্তু অত ভালভাবে খুঁজে দেখছি না। এবং আমরা এর পেছনে খুব কম অর্থ ব্যয় করছি!
আমাদের ছায়াপথের সব তারার মাঝে খুব অল্প কিছু তারাই
ভালভাবে দেখা হয়েছে কোন সিগনালের আশায়।
কিংবা হতে পারে আমর ঠিক দিকে খুজঁছি না।
হতে পারে যখন সভ্যতাগুলো উন্নত হতে থাকে,
তারা অনেক তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করার এমন সব প্রযুক্তি আবিস্কার করে ফেলে
যা অনেক বেশি উন্নত এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের চেয়েও বেশি কার্যকরী।
হতে পারে যা কিছু হয়
তা হয়ত এই নতুন আবিস্কার হওয়া ডার্ক ম্যাটার আর ডার্ক এনার্জির এর ভেতরে হয়,
যা এই মহাবিশ্বের বেশিরভাগ ভরের জন্য দায়ী।
অথবা আমরা হয়ত ভুল মাপে দেখছি।
হয়ত বুদ্ধিমান সভ্যতাগুলো উপলব্ধি করতে পেরেছে যে
জীবন হল শুধু কিছু জটিল ধারার তথ্য
যারা নানাভাবে নিজেদের মাঝে যোগাযোগ করে একটা সুন্দর উপায়ে,
আর সেটা অনেক ভালো ভাবে সম্ভব একটা ছোট পরিসরে!
পৃথিবীতে যেমন স্টেরিও সিস্টেম গুলো একটা বেঢপ অবস্থা থেকে
ছোট হয়ে একটা সুন্দর আইপডে পরিণত হয়েছে, তেমনি হয়ত উন্নত জীবনগুলো ছোট করে ফেলেছে
যেন পরিবেশের উপর চাপ কম পড়ে।
হয়ত তারা নিজেদের আনুবীক্ষনীক করে ফেলেছে।
হয়ত এই সৌরজগৎ ভিনগ্রহের মানুষ দিয়ে ভরে গেছে, অথচ আমরা তা বুঝতেও পারছি না।
হতে পারে আমাদের মাথার এই চিন্তাগুলোই এক ধরনের এলিয়েন জীবন।
নাহ, ভাবনাগুলো মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে!
মনে হয় ভিনগ্রহের মানুষগুলো আমাকে ওটা বলিয়ে নিয়েছে!
কিন্তু এটা একটা মজার ধারনা যে হয়ত এই চিন্তাগুলোর নিজেদের একটা জীবন আছে
আর তারা তাদের স্রষ্টাদের চেয়েও বেশি বাচঁতে পারে।
হতে পারে আমরা যাকে জীবন বলি তা আসলে শুধু একটা পর্যায়।
এমনটা হতে পারে, পরবর্তী ১৫ বছরের মাঝে
আমরা হয়ত বর্ণালিবীক্ষন দিয়ে সত্যিকার তথ্য দেখতে পাব
যা থেকে আমরা বুঝতে পারব আশেপাশের কোন গ্রহ গুলো জীবনধারনের জন্য উপযোগী!
আর এর মাঝে সেটি(SETI) দ্য সার্চ ফর এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল ইনটেলিজেন্স
তাদের তথ্যগুলো জন সাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছে
যাতে লক্ষ লক্ষ বিজ্ঞানী নাগরিকরা, যার মাঝে আপনিও থাকতে পারেন,
এমন শক্তি এনে দেবে জনসমাজকে যেন তারা এই খোজেঁ যোগ দিতে পারে।
আর এই পৃথিবীতে অসাধারন সব পরীক্ষা চলছে
একদম শুরু থেকে জীবন সৃষ্টি করার।
জীবন আমাদের পরিচিত ডি.এন.এ লিপি থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন কিছুও হতে পারে।
আর এ সব কিছুই আমাদের সাহায্য করবে এটা বুঝতে যে
আসলেই আমাদের এই মহাবিশ্ব কি জীবন দিয়ে ভরপুর
বা আমরা সত্যিই একা কি না!
যে উত্তরই হোক না কেন,
এটা দারুন অনুপ্রেরণাজনক।
কারন যদি আমরা সত্যিই একা হয়ে থাকি,
এবং এই ব্যাপারটা যে আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি আর এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করতে পারি
এটাই হয়ত এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
আর আপনার জন্যে আমার একটা দারুন খবর রয়েছে!
জ্ঞান এর সন্ধান আর তা বোঝা কখনই নিরানন্দকর কিছুতে পরিণত হয় না।
বরং ঠিক এর উল্টোটা হয়। যত বেশি জানা যায়,
এই পৃথিবীর সব কিছু আরো অসাধারন মনে হয়।
আর এই পাগল করা সম্ভাবনা আর উত্তর খুঁজে না পাওয়া প্রশ্ন গুলোই আমাদের সামনে নিয়ে যায়! আর তাই
বাচুঁন আগ্রহ নিয়ে !