Tip:
Highlight text to annotate it
X
মুভির নামঃ দি কিউরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন
অনুবাদকঃ নাজমুল হোসেন শুভ।
যোগাযোগঃ tnyme.com/nazmul
আর আমি বলছি, ঝড়টা এখনো
পশ্চিমের দিকে যাচ্ছে।
তুমি কি দেখছো, ক্যারোলিন?
বাতাস দেখছি, মা।
ওরা বলছে হারিকেন ঝড় আসছে।
আমি নৌকার সওয়ার।
আমি ভাসছি।
তোমার জন্য কী করতে পারি, মা?
কিছু সহজ করে দিতে পারি কি?
ওগো মিষ্টি মেয়ে
আর কিছু বাকি নেই করার মত।
চোখ খোলা রাখতেও কষ্ট হচ্ছে।
তুলায় মুখ ভরে গেছে।
এইতো, মিস ডেইজি।
আপনি নিজেকে ফিতার সাথে
ঘষা দিতে যাচ্ছিলেন।
মা, আপনার আর কোন চিকিৎসা লাগবে?
ডক্টর বলেছে তুমি ইচ্ছেমত খেতে পারবে।
কাউকে কষ্ট দেবার দরকার নেই।
এক বন্ধু বলেছিল সে তার মাকে
বিদায় বলারও সুযোগ পায়নি।
-আমি চাইছিলাম...
- ঠিক আছে।
আমি বলতে চাইছিলাম যে তোমাকে
আমি কতটা মিস করবো, তাই...
মা।
ওহ, কোরালিন।
ভয় লাগছে?
কৌতুহল হচ্ছে।
এরপরে কী হবে?
ওরা ১৯১৮ সালে রেল স্টেশন বানিয়েছে।
উদ্বোধনের দিন বাবা ছিলেন ওখানে।
বলেছিলেন সেখানে একটা
টিউবা ব্যান্ড বাজছিলো।
পশ্চিমে একজন অসাধারণ
ঘড়ি তৈরীকারক ছিলেন।
তার নাম ছিলো জনাব গেটো।
জনাব কেক।
এভাঙ্গেলিন পেরিশের ক্রেওলকে বিয়ে
করেছিলেন, ওদের ছেলেও ছিলো একজন।
গেটো জন্ম থেকেই অন্ধ ছিলেন।
ছেলের বয়স বাড়ার পরে সে
সেনাবাহিনীতে যোগ দিলো।
তারা দোয়া করছিলো যাতে তাদের
ছেলে সকল বিপদ থেকে দূরে থাকে।
মাসের পর মাস উনি ওই ঘড়ির কাজ
ছাড়া আর কোন কাজ করছিলেন না।
এক দিন, একটি চিঠি আসলো।
আর জনাব গেটো, ওই
রাতের মত শুতে গেলেন।
ছেলে ফিরে এলো লাশ হয়ে।
পরিবারের জমিতে দাফন দেয়া হলো তাকে, সময়
এলে যেখানে তার বাবা মাকেও যেতে হবে।
জনাব কেক ঘড়ির কাজ শেষ করছিলেন।
মনে পরে এক সকালে বাবা বলল
অনেক মানুষ ছিলো তখন সবখানে।
টেডি রূজভেল্টও এসেছিলো।
ওটা উল্টোভাবে চলছে।
এভাবেই এটা বানিয়েছি, কারণ যে দামাল ছেলেরা যুদ্ধে মারা গেছে, তারা যেন আবার ঘরে
ফিরে আসতে পারে। চাষ করতে, কাজ করতে, আর বাচ্চা নিতে পারে। বহু বছর বেঁচে থাকতে পারে।
আমার নিজের ছেলেও ফিরে
আসতে পারতো তাহলে।
মাফ চাইছি সবার সাথে
অন্যায় করার জন্য।
আশা করি আমার ঘড়ি
আপনাদের ভালো লেগেছে।
জনাব কেককে আর দেখা গেলো না।
কেউ বলে তিনি ব্যাথিত মন নিয়ে মারা গেছেন।
কেউ বলে সে সমুদ্রে চলে গেছে।
মাফ করবেন।
কেউ আমার বাচ্চার দেখাশোনা করছে।
একটা ফোন করলে কিছু মনে করবেন?
অবশ্যই।
আশা করছি আমি আশাহত করিনি।
আমাকে হতাশ করা অসম্ভব।
আমি জানি আমার দেখানোর
মত কিছু নেই।
আমার কালো সু্টকেসটা বের করো।
একটা ডায়েরি আছে।
এটা?
পড়ে শোনাতে পারবে?
যদি তুমি তাই চাও।
আমি অনেকবার অনেকভাবে
এটা পড়ার চেষ্টা করেছি।
মা, এটা ঠিক...
এটা মুখের ভাষার মত, প্রিয়।
ওকে।
তারিখ-৪ এপ্রিল, ১৯৮৫।
নিউ অরলিন্স।
"এটা আমার শেষ উইল
আমার খুব বেশী কোন টাকা
পয়সা বা সম্পত্তি নেই।
আমি এই পৃথিবী থেকে যেভাবে শুন্য
হাতে এসেছিলাম সেভাবেই চলে যাবো।
আমার যা আছে তা আমার গল্প,
আর আমি এটা লিখে রাখছি
যাতে মনে থাকে।
আমার নাম বেঞ্জামিন।
বেঞ্জামিন বাটন।
আর আমি একটু অন্যরকম
অবস্থার মধ্যে জন্মেছি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ। বলা হয় সেটা
জন্মাবার পক্ষে খুবই ভালো রাত।
ভাগ্যিস যুদ্ধ শেষ।
আমরা যুদ্ধে জিতেছি।
কালজয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটেছে।
আপনি এখানে কি করছেন?
থমাস,
সে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।
কি?
অনেক হয়েছে।
সবাই সরে যাও তার কাছ থেকে।
আমি যত দ্রুত পেরেছি এসে পরেছি।
রাস্তায় লোক ভর্তি।
থমাস।
কথা দাও ওর থাকার
জায়গার অভাব হবে না।
হ্যাঁ।
উনি আমার জন্য জীবন দিলেন।
সেজন্য আমি সর্বদা কৃতজ্ঞ।
জনাব বাটন।
থমাস!
থমাস!
থমাস! করছ কী তুমি?
হেই! কি করছিস!
তোর কাছে কী ওটা?
-কাছে এস।
-জনাব ওয়েদারস!
তুমি জানো আমার এখানে অনেক কাজ।
-একটু বিরতি নাও।
-বোকামি কোরনা।
মিষ্টি বাতাস।
মিস কুইনি, আপনাকে আজ
রাতে অনেক সুন্দর লাগছে।
এই পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে বেশী সুন্দর।
বাদামী চোখের সাথে মিলে গেছে।
ওহ! চুপ কর!
তোমাকে দেখো।
নিজেকেও একটু শান্তি দাও।
হ্যাম্বার্ট শহরে ফিরে এসেছে।
পা হারিয়েছে, তবু ফিরেতো এসেছে।
জানি এক সময় তুমি ওর
প্রতি দয়াশীল ছিলে।
প্রয়োজনের বেশী।
মিস সিমন নিজেকে
নোংরা করে ফেলেছেন।
ওহ! খোদা!
উনি এরকম বন্ধ না করলে
ডায়াপার পরিয়ে দেব।
-আমি যাচ্ছি, মিস জেমসন!
-কুইনি, এখন কাছে এসো।
কুইনি এখানেই থাকবে।
বাহির টা ভয়ঙ্কর সুন্দর।
এক মুহূর্ত বাইরে আসো।
বাকি সব ভুলে যাও।
তুমি খুব খারাপ।
-কি হল এটা?
-এটা কী?
খোদা এখানে কিছু একটা করেছেন।
আশা করি ওর ওপরে পা রেখে
আরো বেশী ক্ষতি করিনি।
বিষয়টা পুলিশের কাছেই
ছেড়ে দেয়া উচিত।
বেচারা শিশু।
আমি যাচ্ছি।
আমি নিশ্চিত ওকে কেউ নিতে চায় না।
কাছে এসো।
কুইনি? কোথায় তুমি?
তুমি করো ওটা।
আচ্ছা, যাও, আমি আসছি।
কুইনি, সে সব জায়গা
আবার নোংরা করছে।
জেন, ওকে গোসল করাও।
নিজের চরকায় তেল দিন,
মিস ডুপ্রি।
কয়দিন পর আপনিও
নিজেকে নোংরা করবেন।
কেউ আমার নেকলেস চুরি করেছে।
আচ্ছা, মিস হলিস্টার, আমি
এখনই আসছি আপনার কাছে।
উপরে চলে যান, বুঝলেন?
তুমি একটা পুরোনো পাত্রের মতই কুৎসিত।
তারপরেও তুমি খোদা প্রদত্ত সন্তান।
কুইনি, ও তোমাকে ছাড়া
গোসল করবেনা বলছে।
খোদা বাঁচাও!
আমি এক্ষুনি আসছি।
তুমি এখানেই আমার জন্য
অপেক্ষা কর, ঠিক আছে?
আমার বোনের দেয়া মুক্তার
মালাটা পাচ্ছিনা কোথাও।
-কেউ আমার গহনা চুরি করছে।
-এইতো ওটা, মিসেস হোলিস্টার, দেখুন।
আপনার সুন্দর সাদা গলাতেই আছে।
এখন ঝামেলা বন্ধ করুন।
-ডক্টর রোজ কী এখনো আছেন?
-জানিনা।
আপনার হার্ট ভালোই আছে।
যেকোন মানসিক আঘাত
এড়িয়ে চলতে হবে আরকি?
আমার বিশ্বাস আপনারা মহিলারা
ওকে সাহায্য করবেন।
একটু উপরে আসতে পারবেন?
আগে এমন কিছু দেখিনি।
চোখে ছানিও পড়েছে।
শুনতে পাবে কিনা জানিনা।
হাড় দেখে মনে হচ্ছে আথরাইটিসও আছে।
চামড়া টানটান ভাব হারিয়েছে।
আর হাত পা গুলো বড় হবে না মনে হয়।
তার শরীরের অবনতি আর বৈকল্য ঘটছে। নতুন বাচ্চাদের মত নয়,
বরং আশি বছরের বুড়োর মত যার এক পা কবরে আরেক পা মাটিতে।
ও মারা যাচ্ছে?
ওর শরীর ওর জীবন শুরু করার
আগেই শেষ করে দিচ্ছে।
কার বাচ্চা ও?
আমার বোনের, লাফায়েটে থাকে।
দুর্ভাগ্যজনক অভিযানে গিয়েছিলো।
বেচারা, খারাপ অবস্থার মধ্যে
পরে বাচ্চার জন্ম হয়।
অবাঞ্চিত বাচ্চাদের জন্য
আলাদা জায়গা রয়েছে, কুইনি।
এখানে থাকা খাবার জন্য
পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
নোলান ফাউন্ডেশন ভাবছে,
জায়গাটা একটা বড় উৎপাতের জায়গা।
-একটা বাচ্চা তো...
-আপনি বললেন ও বেশী দিন বাঁচবে না।
কুইনি, জগতের সকল জীবের
বাঁচার অধিকার থাকে না।
এ তো এক অলৌকিক বাচ্চা।
যে অলৌকিকতা কেউ দেখতে চায় না।
সবাই শোন।
একজন নতুন অতিথি এসেছে।
ও কিছুদিনের জন্য
আমাদের এখানে থাকবে।
আমার বোনের বাচ্চা হয়েছে, আর সে ওর
দেখাশোনা করতে পারবে না, তাই...
ওর নাম...
বেঞ্জামিন।
ও স্বাভাবিক না। তাই ওর একটু
অতিরিক্ত খেয়ালের দরকার পড়বে।
আমার ১০ বাচ্চা ছিলো।
আমি দেখাশোনা করতে পারবো না,
এমন বাচ্চা পয়দাই হয় নাই। দেখি একটু।
ও খোদা।
ও দেখতে একদম আমার আগের স্বামীর মতন।
ও আগেভাগেই বুড়ো হয়ে যাচ্ছে।
ডক্টর রোজ বলেছেন, ও বেশিদিন বাঁচবে না।
স্বাগতম।
ও হাসছে !
হ্যাম্বার্ট তার স্বরনবার্তা পাঠিয়েছে।
তুমি কি পাগল?
কেন বুঝছনা যে ওকে তুমি কখনোই
নিজের করে নিতে পারবে না।
তুমি ওকে নিজের কাছে
রাখতে পারো না।
যদিও এটা অমানুষিক কাজ।
জনাব ওয়েদার, এখানে আসুন।
প্লিজ।
কেউ জানেনা তার জন্য
ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে।
মনে হলো আমি একটা
থাকার জায়গা পেয়েছি।
এগুলো কি সত্যি?
তোমার কন্ঠ খুব সুন্দর।
মা, এটা একটা পূরোনো গাড়ির টিকেট।
ঘড়িটা চলতেই থাকলো।
বছরের পর বছর।
আমি জানতাম না, আমি একটা শিশু।
প্রতিদিন একই ফালতু খাবার।
আমি ভাবতাম আমিও অন্য সবার মতই।
জীবনের গোধুলিবেলায়
দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধ।
কেউ ওকে থামাও।
চামচটা পেটানো থামাও।
ওটা খাবার খাওয়ার জন্য, খেলার জন্য না।
আর জনাব বেঞ্জামিন,
আপনার ন্যাপকিনটা ব্যবহার করুন।
কুইনি!
হেই, ছেলে।
আমার একটা কৌতুহল ছিলো।
কি আছে রাস্তার ওপারে?
ধরো ওকে!
বেঞ্জামিন! ওটা বিপদজনক।
এখানে ফিরে এসো।
এখানেই থাকো।
আমি ওকে খুব ভালো বাসতাম।
সে আমার মা ছিলো।
মা।
কোন কোন দিন আমি অন্যান্য
দিনের চেয়ে আলাদা অনুভব করি।
সবাই কোন না কোন ভাবে নিজের
ব্যাপারে আলাদা কিছু ভাবে।
আমরা সবাই একই গন্তব্যের পথিক।
শুধু পথটাই ভিন্ন।
তুমি তোমার নিজের পথে আছো, বেঞ্জামিন।
মা? আমি আর কতদিন বাঁচবো।
যা পেয়েছ, তা নিয়েই খুশি থাক।
তোমার যতদিন বাঁচার কথা ছিলো, তুমি
তার থেকেও অনেক বেশিদিন বেঁচেছ।
কোন কোন রাতে আমাকে একা শুতে হত।
আমি কিছু মনে করি না।
আমি সবার নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতাম।
সবাই ঘুমাচ্ছে।
আমি নিরাপদ বোধ করতাম।
জায়গাটা একদম রুটিন অনুযায়ী চলত।
যে ঋতুই থাক না কেন, প্রতিদিন সকাল সাড়ে পাঁচটায় আমেরিকান
আর্মি হতে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল উইন্সলো পতাকা উত্তোলোন করতেন।
মিসেস সিবিল ওয়াগনার,
এক সময় অপেরায় গান গাইতেন।
আচ্ছা সোনা, কাম অন।
এই বুড়ো লাঠিগুলোতে একটু
জীবন সঞ্চার করা যাক।
যাতে হাটা শুরু করে আমাকে
সাহায্য করতে পারো, বুঝেছো।
যেই ঋতুই হোক না কেন,
রাতের খাবার একদম ৫:৩০ এই দেয়া হতো।
মোলাসেস।
আমি পাঁচ বছর বয়সে
পড়তে শিখেছিলাম।
আমার দাদা একজন বিখ্যাত
অভিনেতার দর্জি ছিলেন।
উনি আমার জন্য সবগুলো
নাটকের সংলাপ নিয়ে আসতেন।
(নাটকের দুর্বোধ্য সংলাপ)
তুমি আমাকে বেকুব
ভেবেছিলে তাই না?
আমার দাদা যেই অভিনেতার জন্য কাজ
করতেন, সে ছিলো জন উইল্কস বুথ।
সে আব্রাহাম লিঙ্কনকে হত্যা করেছিলো।
কেউ জানেনা ভবিষ্যতে
কি ঘটতে চলেছে।
শনিবার রাতে মা আমাকে
চার্চে নিয়ে যেত।
বেঞ্জামিন!
-আমিন! আমিন!
-আমিন! আমিন!
তোমার জন্য কি করতে পারি বোন?
তার শরীর সন্তান জন্মদানে অক্ষম।
খোদা, তার সব পাপ মাফ করে দাও,
আর তার সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ফিরিয়ে দাও।
সব যন্ত্রনা দূর হয়ে যাও!
- আস্তাগফিরুল্লাহ!
- সুবহানাল্লাহ!
আর এই বুড়ো লোকটার ব্যাপার কী?
ওর পেছনে শয়তান ঘুরছে।
যেটা ওকে সময় আসার আগেই
কবরে নেবার পাঁয়তারা করছে।
-দূর হ, শয়তান!
-হ্যাঁ!
-দূর হ, শয়তানী!
-হ্যাঁ!
তোমার বয়স কত?
সাত, আমাকে দেখতে বুড়ো লাগে।
খোদা তোমার মঙ্গল করুক।
ওর বয়স সাত।
ওর মন আশায় ভরপুর।
-আচ্ছা।
-আত্মায় বিশ্বাস রাখ!
-হ্যাঁ!
-হ্যাঁ!
খোদার চোখে সবাই সমান।
-হা!
-সুবহানাল্লাহ!
তোমাকে এই চেয়ারের
গন্ডি থেকে বের করবই।
-তোমাকে হাটতে হবে।
-আমিন!
সব ঠিক আছে।
খোদার শপথ...
উঠে দাঁড়াও!
চলো!
ওঠো।
জাগ্রত হও।
ওঠো, ওঠো...
এখন খোদাই তোমাকে পথ দেখাবে।
দেখবেন কিভাবে এই বৃদ্ধ লোক
ক্রাচ ছাড়াই হাটতে পারে।
বিশ্বাসের শক্তিতে ভর করে
একাই হেটে চলবে তুমি।
-চলো, বালক।
-হাটো।
-হ্যাঁ।
-আস।
ধরবেনা ওকে!
জ্বলে ওঠো আপন শক্তিতে!!!
সুবহানাল্লাহ!
হ্যাঁ!
আসো।
বলো সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ!
হাটো।
হাঁটো, হ্যাঁ।
সব ঠিক আছে, বেঞ্জামিন।
বিষয়টা ভাবলে মনে হয়, ওটা অসাধারণ!!!
কিন্তু একটা প্রবাদ আছে,
"নদীর একূল গড়লে ওকূল ভাঙ্গে"
আল্লাহ মহান!
ও খোদা!
- না!
- না!
এখানে অনেক জন্মদিন হয়!
এই হাসি খুশি মানুষটার জন্য...
এই হাসি খুশি মানুষটার জন্য...
আমরা এখন মোমবাতি নেভাবো।
কুইনি, তুমি জানো আমার জন্মদিন
পালন, কেক কোন্টাই পছন্দ না।
মৃত্যু এখানকার এক নিয়মিত অতিথি।
মানুষকে নিয়ে যেতে আসে।
এখানে কেউ মারা গেলে
সহজেই বোঝা যায়।
বাড়িটাকে নীরবতা আচ্ছন্ন করে ফেলে।
বেড়ে ওঠার জন্য জায়গাটা খুবই ভাল।
যাদের সাথে ছিলাম, তার তাদের আগের
জীবনের প্রতি আলোকপাত করতেন।
আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত হওয়া,
গোসলের পানির তাপমাত্রা নিয়ে কথা বলা,
এসব নিয়ে কথা বলেই দিন ফুরাতো।
কেউ মারা গেলে তার যায়গা
পূরণ করতে অন্য কেউ আসতো।
আমি ৫ বার শাদী করেছি।
আমি আমার পঞ্চম বউয়ের সাথে নরখাদকদের
কাছে বন্দী ছিলাম।
কি ভয়ানক।
নদী পার হয়ে ভেগে এসেছিলাম।
আমার বউ সাতার পারত না
বলে তাকে খেয়ে ফেলা হলো।
ইশ!
আমার দ্বিতীয় বউ কোবরা সাপের গায়ে
পা রেখে তার কামড়ে মারা যায়।
বিয়ে জিনিসটাই আমার
জন্য দুর্ভাগ্য স্বরূপ।
উনি জনাব ওটি। ও আমার
এক বন্ধুর পরিচিত।
-পরের গ্রীষ্মে আমি বন্দী হলাম...
-ও বামন।
. . .তিনজনের সাথে
ব্যাশীয়েল উপজাতিদের কাছে।
একজন অদ্ভুত আমেরিকানের সাথে আমার
শুকর, জুতা আর মদের ব্যবসা ছিল।
আমি শুনেছি তুমি ততটা
বুড়ো নও, যতটা দেখা যায়।
তুমি সবাইকে বোকা বানাও।
কি হয়েছে তোমার?
তোমার ম্যাজাম্বি হয়েছে?
ম্যাজাম্বি কী?
ক্রিমি।
আমার মনে হয়না আমার ক্রিমি হয়েছে।
আমি এমনই।
-তুমি আজকে ঔষধ খেয়েছ?
-না, ম্যাম
চলো, ঘুরে আসি।
আমি আপনার বালিশের নিচে ঔষধ পেয়েছি।
উচিত হবেনা, বিপদজনক আমার জন্য।
কে বলেছে, চলো বাচ্চা।
হ্যালো, বাচ্চারা।
দাঁড়াও।
তারপর আমি ফিলাডেলফিয়ার
চিড়িয়াখানায় বাঁদরের খাচায় ছিলাম।
প্রথমদিন ৩০০০ লোক
আমাকে দেখতে আসে।
দেখো।
খাচায় থাকতে কেমন লাগে?
দুর্গন্ধ।
বাদরগুলো না।
ওগুলো অনেক মজা করে।
আমি ওদের দিকে বর্শা ছুড়ি, রেসলিং করি।
ওটা ওরাং ওটাং।
যখন ওদের সাথে খেলি না,
ওরা চায় আমি আমার দাত দেখিয়ে...
... খাঁচার গরাদের দিকে যাই।
তারপরে?
তারপর আমি চিড়িয়াখানা থেকে বের হয়ে
এখানে সেখানে যাই, আর অবাক হই।
একা একাই?
জীবনের বেশীরভাগ সময়ই একা থাকতে হয়।
তুমি আমাদের মতন সবার থেকে আলাদা বলেই
এটা মেনে নিতে হবে।
কিন্তু তোমাকে একটা গোপন কথা বলি।
মটু, চিকনা, লম্বু...
...ফর্সা সবাই আমাদের মতই একা।
কিন্তু ওরা একা থাকতে ভয় পায়।
আমার মনে পরে সেই নদীর কথা,
যেখানে আমি বড় হয়েছি।
আব্র যদি সেই নদীর ধারে বসতে পারতাম।
চলো, আমার একজনের সাথে দেখা করতে হবে।
এইতো আমার খাটো মানব।
তুমি রেডি, প্রিয়?
সবসময়ই আমি রেডি।
ফিলামেনা, উনি জনাব বেঞ্জামিন।
-দেখা হয়ে ভালো লাগলো, স্যার।
-আমিও খুশী, ম্যাম।
তুমি নিজের রাস্তা খুজে নিতে পারবে, তাই না?
সেন্ট চার্লস লাইন ধরে নেপোলিয়নের দিকে চলে যাও।
হেই! হেই!
ছিলে কোথায় তুমি?
ভেতরে আসো।
জানো, একটু হলেই আমার প্রাণ বের হয়ে যাচ্ছিলো।
আমার খুব চিন্তা হচ্ছিলো।
ওটা আমার জীবনের সেরা দিনগুলির একটি।
-তার শ্বাস-প্রশ্বাস কেমন চলছে?
-মন্থর।
ওটা কয়েক ঘণ্টায়ই এসে পড়বে,
আমাকে আমার বাচ্চাকে আমার
বোনের কাছে দিয়ে আসতে হবে।
ওরা বলল চিন্তার কিছুই নেই।
দরকার হলেই নার্সরা কাছেই থাকবে।
তুমি ঠিক আছো?
-হ্যা, আমি পড়ছি।
-আমার একঘন্টার বেশী লাগবে না।
সে কী শুধুই বন্ধু?
ডরোথী চলে যাচ্ছে।
পড়তে থাকো, ক্যারোলিন।
রোববারে সবার পরিবার এখানে আসে।
সেটা ছিলো থ্যাঙ্কসগিভিং ডে, ১৯৩০।
আমার তার সাথে দেখা হলো,
যে আমার জীবন বদলে দিলো।
আচ্ছা, বেঞ্জামিন।
বলতেই হচ্ছে, তোমাকে একজন যুবকের মতই লাগছে।
শুভ দিন, মিসেস ফুলার।
পুরো সোজা বাশের মতন,
পিঠ একদম সোজা তীরের মতন।
কোন মহৌষধ খাওয়া শুরু করলে?
-ধন্যবাদ, ম্যাম।
-দাদী, দেখো আমাকে।
এটা অসাধারণ।
এখানে আসো।
ও আমার নাতনী, ডেইসী।
উনি জনাব...
মাফ করবেন, আমি আপনার নামের শেষাংশ জানি না।
বেঞ্জামিনই ঠিক আছে।
আমি তার নীল নয়ন দু'টি ভুলবোনা কক্ষনো।
সবাইকে বলছি, রাতের খাবার সার্ভ করা হয়েছে।
স্বাথ্য এবং খাবার, ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের জন্য।
আর পৃথিবীর সকল ভালো কাজের জন্য।
আমিন।
-আমিন।
-আমিন।
তুমি কি জানো টার্কি আসলে কোন পাখি না?
কেন বলছো এটা?
ওরা লম্বা লেজবিশিষ্ট হয়,
তাই উড়তে পারে না।
দুঃখের বিষয়, তাই না?
পাখি, অথচ উড়তে পারে না।
যে পাখি উড়তে পারে না, সে পাখি আমার প্রিয়।
ওগুলো খেতে সুস্বাদু হয়।
-কি ভয়ঙ্কর।
-আম্র সবাইকে কিছু বলবার আছে।
যখন আমরা খোদার আশির্বাদকে ধন্যবাদ দিচ্ছি,
তখন অভাবনীয় কিছু ঘটে।
খোদা আমাদের প্রার্থনা কবুল করেছেন।
কিছুই মাথায় ঢুকলো না,
কোন প্রার্থনা?
ধন্যবাদ।
তার বাচ্চা হতে যাচ্ছে, বেকুব।
এজন্যই মা বলেছিল, আমার একটা ভাই হবে,
কিন্তু ও বেশীক্ষন বাচলো না।
কারণ ও ঠিকমত শ্বাস নিচ্ছিলো না।
"বিকালে যখন সে তার সুন্দর হরীণ পেয়ে গেলো,
"বিশাল নাকোং কথা দিলো।
"তুমি সেটা ঠিক ৫ টায় দেখতে পাবে।
"কারণ নাকোং-এর ঘড়ি তাই বলছিল।"
অসাধারণ, তাই না?
আবার পড়ো।
হ্যা, আবার পড়ো।
আচ্ছা, কিন্তু তারপরে ঘুমাতে যাবে।
কথা দিলাম।
"বুড়ো ক্যাঙ্গারু"
ঘুমালে নাকি?
কে?
আমি, ডেইসী।
ওহ, হাই।
আসো।
কোথায় যাচ্ছি?
নিচ দিয়ে আসো।
জ্বালাও।
আমার আগুন নিয়ে খেলা নিষেধ।
মুরগীর মত করোনা, জ্বালাও।
আমি তোমাকে একটা গোপন কথার বদলে
একটা গোপন কথা বলবো।
আচ্ছা।
আমি আমার মাকে অন্য এক লোককে চুমু খেতে দেখেছি।
মার চেহারা লজ্জায় লাল হয়ে ছিলো।
তোমার পালা।
দেখে যা মনে হয় , আমি ততটা বুড়ো নই।
আমিও তাই ভেবেছিলাম।
তোমাকে বুড়োদের মত লাগে না।
-যেমন দাদীর মত।
-আমি তার মত না।
তুমি কি অসুস্থ?
আমি মা আর টিজিকে ফিস-ফিসাতে শুনেছি।
বলছিল আমি শীঘ্রই মারা যাবো,
মনে তো হয় না।
তুমি অদ্ভুত।
আমার যাদের সাথে দেখা হয়েছে তাদের
সবার থেকে তুমি আলাদা।
-ছুঁতে পারি?
-আচ্ছা।
কি করছ তোমরা?
এক্ষনি বের হও আর বিছানায় যাও।
এখন মাঝরাত!
এটা খেলার সময় না।
হ্যা, ম্যাম।
এখন বিছানায় যাও, ছোট্ট মেয়ে।
রাতের বেলা একা একা ঘোরার পক্ষে
তুমি অনেক ছোট।
আর তোমার লজ্জিত হওয়া উচিত।
তুমি অন্যরকম।
মানব শিশু।
আর কেউ বোঝেনা তুমি কতটা আলাদা।
আমার কি হয়েছে মা?
কাছে আসো।
খোদা এ বিষয়ে কিছু বলেনি, বেবী।
এখন বিছানায় যাও।
আর ভাল ব্যবহার কর।
যাও, প্রার্থনা কর।
আমি কি তোমায় বলেছিলাম যে,
আমি ৭বার বজ্রাহত হয়েছি?
একবার আমি ছাদের ফুটো ঠিক করছিলাম।
আরেকবার চিঠি আনতে রাস্তা পার হচ্ছিলাম।
আমি কখনোই ভুলতে পারবো না...
তার নীল দু'টি চোখ।
মা?
তুমি কি বুঝেছ যে বেঞ্জামিন তোমাকে
প্রথম দেখা থেকেই ভালোবাসত?
খুব বেশী লোকের এই অভিজ্ঞতা হয়নি।
আমাকে চালিয়ে দিতে যেতে চাও?
সে কিছু বাদ দিয়ে গেছে।
যখন বাচ্চাটা আসলো,
সব অন্যরকম ছিলো।
তোমার মা চলে গেছে,
আর তোমার বাবা থাকবে।
শিশুকে ছেড়ে যেওনা।
একদিকে শিশু জন্মায়, অন্যদিকে মানুষ মরে।
অনেকেই এই পুরোনো বাড়িতে থেকেছে।
আমি বিদায় জানাতে এসেছি।
আমি চলে যাচ্ছি।
যাচ্ছ?
কোথায়?
জানি না।
কিন্তু যাওয়ার পরে চিঠি লিখব তোমাকে।
আপনার সেই লম্বা মহিলা বন্ধুর কি হবে?
আমরা এখন আর বন্ধু নেই।
লম্বুদের এই সমস্যা মাঝে মাঝেই হয়।
আচ্ছা, বিদায়।
সে বধর অনেকটা সময় একা কাটিয়েছি।
হ্যালো?
-হাই।
-আমি আজ আসছি।
স্বাগতম। আমাই তোমাকেই দেখতে চাচ্ছিলাম।
তাকে মিসেস রউসেউ'র পুরানো রুমটা দেখিয়ে দেবে?
দুঃখিত, সাধারণতঃ ঘরে কুকুর বরদাশত করা হয় না।
সে অনেক বৃদ্ধ,
আর প্রায় অন্ধ।
সে বেশিদিন বিরক্ত করবে না।
যতদিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে আর কি।
এই দিকে, ম্যাম।
যতই মনে করি, তার নামটা মনে আসে না।
মিসেস লসন, বা মিসেস হার্টফোর্ড।
মনেহয় ম্যাপল।
মজার ব্যাপার হলো যাদের সাথে
আমাদের কম দেখা হয়,
তাদেরকেই আমাদের সবচেয়ে বেশী মনে পড়ে।
মনে পড়ে সে হীরের অলঙ্কার পড়েছিল।
আর বাইরে যাবার সময় সুন্দর
জামা-কাপড়ও পড়তেন।
যদিও কখনো বাইরেও যাননি,
আর কেউ তার কাছে আসেও নি।
উনি আমাকে পিয়ানো বাজানো শিখিয়েছিলেন।
কতটা ভালো বাজাও সেটা বড় কথা না।
বাজানোর সময় তোমার অনুভূতি কত ভালো,
সেটাই আসল।
এটা করে দেখাও।
নিজেকে সুরের সাথে মিশিয়ে ফেলো।
অনেক পরিবর্তন দেখা গেলো।
কিছুটা দেখা যায়,
কিছুটা যায় না।
কিছু যায়গায় চুল গজাচ্ছে।
আরো অনেক কিছুই গজাচ্ছে।
নিজেকে নিজের কাছে ভালোই মনে হচ্ছিলো।
ব্যাথাটা শুরু হয়েছে।
আচ্ছা, মা, আমি নার্সকে ডাকছি।
লক্ষ্য করুন,
বড়সড় হারিকেন (ঝড়) আসছে।
আস্তে আস্তে,
অনেক জোরালো বাতাসের সাথে...
ভালো বোধ করছেন না?
কেউ জানেনা কোথায় থাকা উচিত।
আমি শুধু চলতে সাহায্য করি।
সব ঠিক হবার কথা এখন।
বিদায় বলতে পেরেছ?
আমার বাবা বজার শহর থেকে আসা
আমার ভাইয়ের জন্য ৪ঘন্টা অপেক্ষা করেছিলেন।
তাকে ছেড়ে যেতে চাননি।
-অনেক ভালো মহিলা মনে হয়।
-হ্যাঁ।
আমি অত সময় পাইনি...
-ব্যস্ত নাকি? তোমার সাহায্য লাগবে।
-মাফ করবেন।
অবশ্যই।
কুইনি আমাকে জনাব ডসের সাথে যেতে দিতেন।
পভার্টি পয়েন্ট থেকে নৌকাগুলো দেখে রাখার জন্য।
সময় কঠিন ছিলো।
আমি কি তোমাকে বলেছি,
যে আমি ৭ বার বজ্রাহত হয়েছি?
একবার যখন মাঠে গরু চরাচ্ছিলাম।
সব ঠিক চলছিল না।
২ ডলারের জন্য সারাদিন কাজ
করতে রাজি আছো কেউ?
কি হল?
কেউ সৎভাবে আয় করতে চাও না?
ও কোন টাকাই দেয় না।
-কারো চাকরি লাগবে না?
-আমার লাগবে।
সব পা ঠিক আছে তো?
মনে হয়।
চলবে।
জাহাজে ওঠ।
আমার অনেক খুশি লাগছিল।
কয়টা কাজ করা লাগবে।
আমি করবো।
হ্যাঁ, ক্যাপ্টেন।
পাখির @*# গুলো ফেলে দাও।
এক্ষুনি করছি, স্যার।
আমি এমন কিছু করে আয় করতে চাইছিলাম,
যা ফ্রি-ও করা যায়।
তার নাম ক্যাপ্টেন মাইক ক্লার্ক।
৭ বছর বয়সে ছোট নৌকায় কাজ করেছেন।
চলতে থাকো।
এখানে আসো।
তুমি এখনও ওটা পারো?
প্রতি সকালেই করি।
#@*#@**##%**@##*@
মনে হয়।
শেষ কবে তুমি কোন মেয়ের দেখা পেয়েছো?
-কখোনোই না।
-কখোনোই না?
আমার জানামতে তো, না।
দাঁড়াও!
তার মানে তোমার জীবদ্দশায়...
...কোন মেয়ের দেখা পাওনি?
এটা আমার জীবনে শোনা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের কথা।
কখোনোই না?
না।
আচ্ছা তো, তুমি আমার সাথে আসবে।
তোমার বাবা কী করে?
আমি আমার বাবাকে দেখিনি।
তুমি অনেক ভাগ্যবান।
সব বাবাই ছেলেকে আটকে রাখতে চায়।
বাপের নৌকায় দিনে দুইবার কাজ করতাম।
আমি ছোট আর মোটা ছিলাম।
সবাই তাকে বলতো-"টাগ আইরিশ"
যাই হোক আমি সাহস সঞ্চার করে তাকে বললাম,
আমি এই পিচ্চি নৌকায় কাজ করে
জিন্দেগী পার করতে পারবো না।
বুঝোই তো কি বলেছি।
এই পিচ্চি নৌকায় কাজ করে
জিন্দেগী পার করতে পারবা না।
একদম ঠিক!
বাপে কি কয় জানো?
কয়, "নিজেরে কি মনে করস"
এখনো তো তোর দুধের দাঁতই পড়ে নাই।
করবি কি তুই?
আমি কইলাম...
জিগাও তো কই...
আমি শিল্পী হমু।
হাইসা দিলো।
"শিল্পী হবি? তর জন্মই হইছে এই পিচ্চি
নৌকায় কাজ করনের লাইগা।
এইডাই করতে হইবো।"
তারপর আমি নিজেকে শিল্পীতে পরিণত করলাম।
একজন ট্যাটু শিল্পী!
যা শিখেছি, সব নিজের উপর প্রয়োগ করেছি।
আমার শিল্প আমার কাছ থেকে নিতে হলে
আমার চামড়া খুলে নিতে হবে।
মরার পর বাপকে আমার হাত কেটে পাঠাবো।
এইটা।
কাউকে বুঝতে দেবে না,
তুমি আলাদা।
যা করতে ইচ্ছা করে তাই করা উচিত।
আর আমি হয়ে গেলাম শিল্পী।
কিন্তু আপনি তো ছোট নৌকার ক্যাপ্টেন।
ক্যাপ্টেন মাইক?
আমরা আপনার ও আআপ্নার বন্ধুর জন্য তৈরী।
আসো, ভেঙ্গে ফেলো তোমার কুমারত্ব।
-হ্যালো, প্রিয়।
-হেই, ক্যাপ্টেন।
-হাই, ক্যাপ্টেন।
-হাই।
-হাই।
-হাই।
আমি ওকে নেবো না।
আমার অস্বস্তি লাগছে।
কেমন চলছে, দাদু?
রাতটা মনে রাখবার মত।
ধ্বজভঙ্গ হয়েছে নাকি।
বিশ্রাম নিতে দাও।
আবার।
-ধন্যবাদ।
-না, ধন্যবাদ, অনেক ভালো রাত কাটিয়েছো।
-কাল আছো তো?
-রোববার বাদে প্রতিদিনই আছি।
বুঝলাম আয় করে বাঁচা কি জিনিস।
শুভ রাত্রি, প্রিয়।
টাকা তোমাকে কিনে ফেলতে পারে।
বাইরে নোংরা লাগছে।
কোথাও যেতে চাও?
ধন্যবাদ, স্যার।
আমি থমাস, থমাস বাটন।
-আমি বেঞ্জামিন।
-বেঞ্জামিন।
দেখা হয়ে ভালো লাগলো।
চলো কোথাও থেমে কিছু খাই?
আচ্ছা।
শুভ সন্ধ্যা, জনাব বাটন।
কি খাবেন, স্যার?
-উনি যা খাবেন তাই।
-দুজনের জন্যই সাজারেক।
হুইস্কি দেবেন, ব্রান্ডি নয়।
আপনি মদ খান না, তাই না?
-প্রথমবার খেতে আপত্তি নেই।
-সেটা কেমন ছিল?
আগে কখনো পতিতালয়ে যাইনি।
অভিজ্ঞতা থাকা ভালো।
অবশ্যই,
সময় তো আছেই।
-বাস্তব।
-আপনাদের ড্রিঙ্কস।
খারাপভাবে নিও না,
তোমার হাতে কি ব্যাথা আছে?
জন্মথেকেই আমার একটা রোগ ছিল।
কি রকম?
জন্মের সময় আমি বৃদ্ধ ছিলাম।
-দুঃখিত।
-হবেন না।
ওটা কোন খারাপ বিষয় না।
অনেক বছর আগে আমার বউ মারা গিয়েছিলো।
দুঃখিত।
বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়।
- বাচ্চাদের জন্য।
- মায়েদের জন্য।
এখন কি করছেন?
বোতাম, বোতাম।
এমন কোন বোতাম নেই, যা আমরা বানাই না।
বি, এফ গুড্রিচের সাথে
প্রতিযোগিতায় নেমেছি আমরা।
ফালতু জিপার কোম্পানী।
আর কিছু খাবেন?
আরেকটা চলবে, বেঞ্জামিন?
যদি আমাকে তার টাকা দিতে দিন, তো।
তো, আপনি কী করেন?
আমি একটা পিচ্চি নৌকায় কাজ করি।
কথা বলে ভালো লাগলো।
ড্রিঙ্ক করে ভালো লাগলো।
বেঞ্জামিন?
মাঝে মাঝেই হাই হ্যালো
বলতে আসলে কি বিরক্ত হবে?
যেকোনো সময় আসতে পারেন।
শুভরাত্রি, বেঞ্জামিন।
চালাও।
ছিলে কোথায়?
এইতো কয়জনের সাথে দেখা করলাম,
আর গান শুনলাম, এই আরকি।
ওহ! খোদা!!
বড় হওয়াটা মজার।
কচ্ছপের গতিতে চলে প্রক্রিয়াটা।
একজনের স্থান যেনো অন্য কেউ নিয়ে নিচ্ছে।
যেনো শুধু কনুই আর হাটুতে
ভর করে চলতে হয় না।
বেঞ্জামিন! আস!
আচ্ছা।
আমার ভালো লাগতো যখন সে
সপ্তাহ শেষে আসতো...
... আর দাদীর সাথে থাকতো।
ডেইসী, ডেইসী।
একটা জিনিস দেখবে?
কেউ যেনো না জানে।
ডেস চেঞ্জ করে বাড়ির পেছনে দেখা করো।
আসো।
-সাঁতার জানো?
-তুমি পারলে আমিও পারবো।
এটা পরে নাও।
সে ঠিক আছে তো?
ক্যাপ্টেন?
ক্যাপ্টেন মাইক?
শুভ সকাল।
আমাদের একটু ঘুরতে নিতে পারবেন?
জানো আজ কী বার?
রোববার।
এর মানে জানো?
মানে আমি কাল রাতে মাতাল ছিলাম।
আপনি প্রতি রাতেই মাতাল থাকেন।
-মেয়েমানুষ নাকি?
-বান্ধবী।
ওকে নদী দেখাতে চেয়েছিলাম।
অ-নাবিকদের সাথে ভ্রমনে যাওয়া ঠিক না।
লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।
দেরী কিসের?
আহত হাস সারানোর জন্য আনা হয়েছে।
ও ঊড়ছে, না?
ঠিক বলেছ নাবিক!
ইস যদি ওদের সাথে যেতে পারতাম।
কিছু বলছ, মা?
অবস্থা খারাপ।
আমার কথা শুনছ, মা?
সময় ফুরিয়ে আসছে।
দ্রুত সব বদলে যাচ্ছে।
কিভাবে সম্ভব জানিনা,
মনে হচ্ছা তোমার চুল বেড়ে গেছে।
যদি বলি আমি বুড়ো হচ্ছি না।
আমি ধীরে ধীরে যুবক হচ্ছি।
তোমার জন্য কষ্ট হচ্ছে।
তুমি দেখবে তোমার আগেই তোমার
প্রিয় মানুষগুলো মারা যাচ্ছে।
খারাপ লাগবে তোমার।
আমি কখোনো সেভাবে
জন্ম-মৃত্যুর কথা ভাবিনি।
বেঞ্জামিন,আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে
এক সময় হারাতেই হবে।
নয়তো আমরা বুঝবোই না তারা
কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।
আর একদিন আজরাইল এসে
দরজায় করা নাড়লো।
আমার সাথে ফার্মেসীতে যাবে?
উনি আমাকে পিয়ানো বাজানো শিখিয়েছিলেন।
-আমিন।
-আমিন।
আরো শিখিয়েছিলেন কিভাবে
কাউকে মনে রাখতে হয়।
চলো।
আমি পতিতালয়ে গিয়েছি।
প্রথমবার মদ খেয়েছি।
একজনকে বিদায় জানিয়ে
অন্যজনকে কবর দিতে হয়েছে।
১৯৩৬ সালে আমার ১৭ বছর পূর্ণ হল।
আমি তল্পিতল্পা গুটিয়ে সবাইকে
গুডবাই জানালাম।
-বিদায় বেঞ্জামিন।
-বিদায়।
যেভাবে চলছিল,
মনে হয় আর কখোনো দেখা হবে না।
বিদায় বেঞ্জামিন।
-গুডলাক।
-ধন্যবাদ।
-তোমায় ভালোবাসি, মা।
-তোমাকেও আমি ভালোবাসি।
প্রতিরাতে প্রার্থনা করবে।
সাবধানে থাকবে।
বেঞ্জামিন!
-কোথায় যাচ্ছো?
-সমুদ্রে।
চিঠি লিখবো তোমায়।
সব জায়গা থেকে।
সব জায়গা থেকে চিঠি লিখবে।
ভাবতে পারো?
সে সব জায়গা থেকে আমাকে চিঠি পাঠাতো।
যত জায়গাতে সে কাজ করেছে।
Newfoundland. Baffin Bay.
Glasgow. Liverpool. Narvik.
সব জায়গাতে ক্যাপ্টেন মাইকের সাথে যেতো।
ক্যাপ্টেন মাইকের তিন বছরের চুক্তি ছিলো।
মোরান ব্রাদার্স টাগ এন্ড সালভেজের সাথে।
পুরানো জাহজটা নতুন ডিজেল ইঞ্জিন
আর কপিকল দিয়ে ঠিক করা হলো।
ফ্লোরিডা থেকে আটলান্টিকের দিকে যাচ্ছি।
আমরা ক্যাপ্টেন মাইক আর
আমি সহ সাতজন ছিলাম।
কুকি, Wilmington, Delaware থেকে।
দুই যমজ ভাই, রিক আর ভিক।
সমুদ্রে বসে ভাই ভাই।
মাটিতে নামলেই মনে হয় দুই শত্রু।
জানো প্রতি ৮ নৌকার মধ্যে
একটা আর ফেরত আসে না।
আরেকজনের নাম জন গ্রিম।
নাম আর কাজে কোন পার্থক্য নেই।
সবাই সমুদ্রে মারা যায়।
বেল্ডার থেকে দক্ষিন ডেকোটায়।
আর অ্যাশভিলে থেকে নচ-এ।
নিজেকে ছাড়া কাউকে কিছু বলতো না।
আমি তাকে লিখেই যেতাম।
তাকে লিখেছিলাম,
আমি নিউ ইয়র্কে একটা অডিশনে আমন্ত্রণ পাই।
আমেরিকান ব্যালেট স্কুলে।
থাকো।
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ।
থাকো।
কিন্তু আমি ছিলাম ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার।
আরেকটা বেদের মেয়ে জোসনা।
বেঞ্জামিন!
অন্যরকম লাগছে।
আগে তোমাকে কবরের খুঁটির মতো লাগতো।
কিন্তু এখন হয় আমি মাতাল,
নয়তো আমার মনে হয়,
তুমি প্রস্ফুটিত হচ্ছ।
সৌন্দর্যের গোপন রহস্য কী?
যা মনে হয়,
মদ একটু বেশীই খেয়ে ফেলেছেন।
আমরা একটা জাকজমকপূর্ণ নাম কিন্তু ছোট হোটেলে থেকেছি।
নাম উইন্টার প্যালেস।
জানোই না কি বলছো।
হামিংবার্ড কোন সাধারণ পাখি না।
ওটার মিনিটে ১২০০ বার হার্টবিট করে।
ডানা ঝাপ্টায় সেকেন্ডে ৮০ বার।
যদি ডানা ঝাপ্টানো থামিয়ে দাও,
ওটা ১০সেকেন্ডের মধ্যে মারা যাবে।
অসাধারণ পাখি।
আলৌকিক দৃষ্টান্ত।
ওরা ওদের পাখা ছবি তুলে থামিয়ে দিলো।
আর কি দেখলো জানো?
ওদের পাখা এভাবে চলে।
জানো অঙ্কের ভাষায় ৮ মানে কী?
সীমাহীন।
সীমাহীন।
সবাই ওদের মধ্যে যেই
পার্থক্যই থাকুক না কেনো।
যেমন ভাষা বা চামড়ার রঙ।
সবাই একটা কাজ করতই।
প্রতি রাতেই ওরা মাতাল থাকতো।
তিনটা দেবেন।
একটু ধরতে পারো?
ধন্যবাদ, শুভ রাত্রি।
তারনাম এলিজাবেথ অ্যাবোট।
সে সুন্দরী না,
কিন্তু একটা কাগজের মতই সাধারণ।
কিন্তু আমার কাছে উনি ছবির মতই সুন্দর।
কি দেখছ?
মনে রাখা উচিত যে,
আমাদের সংযমী হওয়া বাধ্যতামূলক।
-তাই না, প্রিয়।
-যা বলো সেটাই ঠিক, প্রিয়।
তার স্বামী ওয়াল্টার অ্যাবোট।
সে মুরমান্সকের ব্রিটিশ ট্রেড মিশনের চিফ মিনিস্টার।
আর একজন গুপ্তচরও।
-প্রিয়।
-ধন্যবাদ, প্রিয়।
-চাবি, প্রিয়।
-ওহ, হ্যা।
আমার একটা জুতার হিল ভেঙ্গে গেছে।
আমার খালি পায়ে হাঁটার শখ নেই।
অনেক দিন পার হয়ে গেলো।
অনেক লম্বা রাতও।
এক রাতে আমার ঘুম আসছিলো না।
দুঃখিত।
ঘুম আসছে না।
আমি একটু চা বানাবো।
আপনি খাবেন?
না, ধন্যবাদ।
দুধ? নাকি মধু?
একটু মধু।
মনে হয় আপনি মধু মাছির সাথে মিশিয়ে খান।
নাহ!
পুরোটা ভেজালে ভালো হয়।
পুরোটা।
ডোবান।
জানিনা। মনে হয় আমার জানার বাইরেও
ভালো চা বানানো যায়।
আমি যেখান থেকে এসেছি,
ওখানের লোকজনের গরম চা হলেই চলে।
ঠিক।
-তো, আপনি সমুদ্রমানব।
-নাবিক।
আমাকে অভদ্র বলবেন না,
শুধু জিজ্ঞেস করছি,
আপনি কি একটু বেশীই বৃদ্ধ নন,
জাহাজে কাজ করবার পক্ষে?
কোন বয়সের ব্যাপার নেই।
যতক্ষন কাজ করতে পারেন আর কি।
ঘুমে সমস্যা হয়?
ধন্যবাদ।
আগে হত না।
আমি সবসময় বাচ্চাদের মত ঘুমাই।
এখন মনে হয় জেগে থাকার কিছু পেয়েছি।
আমার বাবা, ৮০ বছর বয়সে,
ওনার মনে হত উনি ঘুমের মধ্যে মারা যাবেন।
তাই উনি বিকালে ঘুমানো কমিয়ে দিলেন।
তার মনে হত এটা করলেই উনি আজীবন জীবিত থাকবেন।
-তারপর?
-তারপর কী?
ঘুমের মধ্যে মারা যান?
উনি তার প্রিয় চেয়ারে বসে থেকে মারা যান।
তখন উনি রেডিওতে ওনার প্রিয় অনুষ্ঠান শুনছিলেন।
মনে হয় উনি আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন।
আমার স্বামী ব্রিটিশ ট্রেড মিনিস্টার,
আর আমরা এখানে ১৪ মাস ধরে আছি।
-বলেন কি!
-আমাদের পেকিঙ্গে যাওয়া উচিত।
মনে হয় না, যেতে পারবো।
কখোনো ফারইস্টে গিয়েছেন?
না, আমি কোথাও যাইনি।
মানে হার্বারের বাইরে কোথাও।
আপনি ছিলেন কোথায়?
নিউ অরলিন্স, লৌসিনিয়াতে।
জানতাম না এরকম জায়গা আরো আছে।
তারপর উনি যত জায়গায় গিয়েছেন
সব জায়গার কথা বললেন।
আমরা ভোর পর্যন্ত কথা বলে গেলাম।
নিজেকে মাতাল মনে হচ্ছিলো।
এরপর আমরা আমাদের নিজেদের ঘরে
আলাদা জীবনে ফিরে গেলাম।
কিন্তু প্রতিরাতেই আমরা লবিতে দেখা করতাম।
মাঝ রাতে হোটেল একটা মোহনীয় স্থান।
ইঁদুর গুলো দৌড়ায়,
আবার থামে।
রেডিয়েটরের শব্দ।
পর্দা ওড়ার শব্দ।
কতকটা শান্তিপূর্ণ,
কতকটা আরামদায়ক।
এটা জানার পর যে প্রিয় মানুষগুলো বিছানায় ঘুমাচ্ছে।
যেখানে কেউ তার ক্ষতি করতে পারবে না।
আমি আর এলিজাবেথ একসময় হারিয়ে যেতাম,
বাস্তবে ফিরতাম ঠিক দিনের শুরুতে।
বোধহয় আপনি ভুল ভাবছেন।
বুঝলাম না।
একজন বিবাহিত মেয়ে কখোনো...
...মাঝরাত অপরিচিত লোকের সাথে কাটায় না।
জানি না একজন বিবাহিত মহিলা
কি করে, আর কি করে না।
শুভ রাত্রি।
মুমান্সক।
"আমার একজনের সাথে দেখা হয়েছে
আর আমি প্রেমে পরেছি।"
মা?
ওটা ৬০ বছর আগের কথা।
আপনি তাকে ভালোবাসতেন মা?
একটা মেয়ে ভালোবাসার বোঝেটা কী?
আচ্ছা...
-আমি ভালো কাপড় পড়িনি।
-তোমাকে সবসময়ের মতই আসাধারণ লাগছে।
মুন্মাস্কের চিজ আর মদের কথা বলে
সময় নষ্ট করো না।
কারন ওগুলো সাধারণ জিনিস।
এই ক্যাভিয়ার আর ভদকা,
একদম উচুশ্রেনীর জিনিস।
তো।
মুখেই রাখুন।
আর পুরোটা একবারে খাবেন না।
কারন তারাতারি খেলে মজা নষ্ট হয়ে যায়।
এখন ওটা মুখে রেখেই একটু ভদকা মুখে দিন।
আপনি বেশী মেয়েদের সাথে থাকেননি তাই না?
রোববার বাদে।
আগে কখোনো ক্যাভিয়ারও খাননি,
তাই না?
না, ম্যাম।
যখন আমার বয়স ১৯,
প্রথম মহিলা হিসেবে আমি ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরেছি।
তাই?
কিন্তু সেদিনের স্রোত
এতো জোরালো ছিলো যে,
একবার সামনে আগালে,
দুইবার পেছনে চলে যেতাম।
আমি ৩২ ঘন্টা পানিতে ছিলাম।
আর যখন কালাইস থেকে ২ মাইল দূরে ছিলাম,
বৃষ্টি শুরু হলো।
থেমে যান!
যখন আমি আর যেতে পারছিলাম না,
আমি থেমে গেলাম।
একদম থেমে গেলাম।
সবাই জিজ্ঞেস করলো আবার চেষ্টা করবো কিনা।
কেন নয়?
কিন্তু আর করলাম না।
আসলে সেরকম কিছু তারপরে আর কখোনো করিনি।
তোমার হাত অমসৃণ।
গালে যেনো বাতাস বইছে তোমার।
মনে হয় এটা ঠিক সময় নয়।
সেই প্রথমবার আমি কোন মেয়েকে চুমু খেলাম।
কখোনোই ভুলবার মত নয়।
মনে হচ্ছে যৌবন ফিরে এসেছে।
মনে হয় তুমিও আমার বয়স
কয়েক বছর কমিয়ে দিয়েছ।
যদি এমন হত।
অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হবে।
সব ভুল শোধরাতে হবে।
কোন ভুল?
আমি অপেক্ষায় ছিলাম।
অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কিছু করব।
কিছু একটা।
সময় নষ্ট।
সেই সময় আর পাবেনা।
নষ্ট করা সময়।
যদি আমাদের প্রেম হয়ে থাকে,
দিনের বেলা কখনোই আমার
দিকে তাকিয়ো না।
আর সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমরা আলাদাই থাকবো।
আর আমরা কখোনোই বলবো না,
"আমি তোমাকে ভালোবাসি"
এটাই নিয়ম।
-ঠান্ডা লাগছে?
-প্রচন্ড।
ওহ! তুমি তো জমে যাচ্ছো।
আমি একটা বেকুব। আমি একাই
এই পশমের ড্রেস পড়ে আছি।
সেই প্রথম মহিলা,
যাকে আমি ভালোবেসেছি।
এগুলো বাদ দিয়ে পড়বো, নাকি?
না, আমি খুশি যা তাকে গরম রাখার মতন কেউ ছিলো।
"তাকে আবার দেখার জন্য তর সইত না আমার।"
আমরা প্রতি রাতেই দেখা করতাম।
আমরা প্রতিদিন একই
রুম ব্যবহার করতাম।
কিন্তু প্রতিরাতই আগের চেয়ে আলাদা।
এসো।
এলিজাবেথ।
শুভ রাত্রি।
এক রাতে...
গতকাল, ডিসেম্বর ৭, ১৯৪১।
যেই দিনটা কুখ্যাত হয়ে থাকবে...
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে একটা মিটিং
সুদূর ভবিষ্যতের জন্য।
প্ল্যান পরিবর্তন করতে হচ্ছে।
জানতেও পারো নাও পারো,
জাপান গতকাল পার্ল হারবারে বম্ব ফেলেছে।
রুজভেল্ট আমাদেরকে নিজেদের
কাজ করতে বলেছেন।
চেলসীকে আমেরিকাকে সাহায্য
করার জন্য টাকা দেয়া হয়েছে।
সারানো, উদ্ধার-এসব করার জন্য।
যদি কেউ যুদ্ধে যেতে না চাও,
তো এখনই বলে ফেলো।
ঐ জাহাজে এখন পা রাখা মানেই
তোমরা নৌবাহিনীর সদস্য।
আমি কিছু বলতে চাই, মাইক।
আমার বউ গরিব মানুষ।
আমি তার সাথে অন্তত একবার দেখতে চাই।
তুমি বাড়ি যেতে পারো, মায়েস।
ও চলে গেলে রাধবে কে?
সমুদ্রে মারা যাবার অন্যতম কারণ হলো-
খাদ্যে বিষক্রিয়া।
অসম্পূর্ণ নিরাপত্তা উপকরণের
পরেই এর অবস্থান।
আমি রাঁধতে পারি, ক্যাপ্টেন।
সারা জীবনই এই কাজ করেছি।
জানি না।
তুমি যুদ্ধের জন্য একটু অস্থির।
আজব।
জাপ আর হান-দের মারার জন্য
আমাকে যে কাউকেই নিতে হবে।
পোটলা গোছাও তবে,
যুদ্ধে যাচ্ছি আমরা।
সে একটা নোট রেখে গেলো।
লিখলো,
"তোমার সাথে দেখা হয়ে ভালো লাগলো"
এটুকুই।
আমরা যেরকম ভেবেছিলাম,
সেরকম যুদ্ধ হয়নি।
পঙ্গু জাহাজের গুন টেনেছি শুধু।
কোন যুদ্ধ আমাদের চোখে পড়েনি।
আরেকজন লোক আমাদের সাথে নিযুক্ত ছিলেন,
নৌবাহিনী প্রেমিক চীফ গার্ডনার।
কিন্তু সবার ওপরে, আমেরিকা প্রেমিক।
এমন দেশটি কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি।
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।
তার নাম ডেনিস স্মিথ,
পাক্কা আমেরিকান।
ওর ফ্যামিলি ৫০০ বছর ধরে আমেরিকায় ছিলো।
প্যাসিফিস্টরা কখনো বিবেক ছাড়া যুদ্ধ করে না।
এমন হলে কেমন হয়, যদি সবাই...
-বিবেক্তাড়িত হয়ে কাজ করে?
-আস্তে বলুন, চীফ।
আমি তোমাকে লক্ষ্য করেছি।
তোমাকে বিশ্বাস করা যায়।
যদি আমার কিছু হয়ে যায়,
এগুলো আমার স্ত্রীর কাছে পাঠাতে পারবে?
ওদের জন্য দশ পয়সাও খরচ করতে পারিনি।
আমি চাই আমার পরিবার জানুক,
আমার ওদের কথা মনে পরে।
সবাই জাহাজের ডেক-এ আসো।
এইদিকে আয় অলস।
অবশেষে যুদ্ধের দেখা পেলাম।
সবাই থামো!
আলো ঘোরাও।
টর্পেডোর আঘাতে ১৩০০লোক মারা গেছে।
আমরাই প্রথম ওখান পৌছেছি।
-ইঞ্জিন বন্ধ করো।
-সবাই থামো।
আমরাই ছিলাম শুধু শব্দ করার জন্য।
বন্ধুরা!
সাব!
আমরা ওদের চোখ এড়াতে পাড়বো ন।
ব্যাটল স্টেশন!
ধন্যবাদ, চীফ!
কী?
এটাই কী শেষটা?
ক্যাপ্টেন!
ওরা আমার ট্যাটুর দফারফা করে ছেড়েছে।
তোমার হাতটা দাও।
আপনি ঠিক হয়ে যাবেন, ক্যাপ্টেন।
আপনার জন্য বেহেশতে সুন্দর
জায়গা অপেক্ষা করছে।
কখোনো তুমি পাগল কুকুরের মত হয়ে যাবে।
কখোনো কথা দেবে,
কখোনো ভাগ্যকে দোষ দেবে।
কিন্তু যখন সব শেষ হয়ে যাবে,
সব ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হবে।
ক্যাপ্টেন?
সেদিন ১৩২৮ জন মারা গিয়েছিলো।
বিদায় জানাতে হলো চেরোকি আর স্মিথকে।
জন গ্রিম ঠিকই ধরেছিলো,
ও সেখানেই মারা গেলো।
কারটিসের বউকে টাকা পাঠালাম।
বিদায় জানালাম যমজ দুই ভাইকে।
আর সেই টাগবোটের ক্যাপ্টেন মাইক-কে।
যারা নিজেদের জন্য স্বপ্ন দেখতো,
সবাইকে বিদায় জানালাম।
সবাইকে বিদায় জানালাম, যারা...
... ডাক্তার, উকিল বা চীফ হতে চেয়েছিলো।
কিছুই হলোনা।
মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো না কারো।
সমুদ্রে আর হামিংবার্ড দেখতে পাবো না।
বোধহয় বাকি জীবনে আর হবে না।
আর ১৯৪৫ সালের মে মাসে,
যখন আমার বয়স ২৬।
আমি ঘরে ফিরে এলাম।
আমি রেডি! রেডি!
আসছি।
-আমি প্রস্তুত!
-আচ্ছা, আমি আসছি মিস আলফালিনা।
-কুইনি?
-হ্যাঁ?
ওহ! খোদা! তুমি ফিরে এসেছো!
-একটু দেখতে দাও!
-উনি কে, মা?
-ও তোমার ভাই, বেঞ্জামিন।
-আমি জানতাম না, আমার কোন ভাই আছে।
তুমি জানো কচু!
ঝাড়ু দেয়া শেষ করো।
তারপর হাত ধুয়ে টেবিলে সাহায্য করো, যাও।
দেখি,
মনে হয় তুমি আবার জন্মেছিলে।
বসন্তের মতো উজ্জিবিত।
মনে হয় সেই ধর্মপ্রচারক তোমার গায়ে
হাত রেখে নতুন জীবন সঞ্চার করেছেন।
তোমাকে দেখেই বুজেছিলাম,
তুমি স্পেশাল।
আমার পা ব্যাথা হয়ে যেতো,
কারণ প্রতি রাতে আমি প্রার্থনা করতাম।
আর বলতাম,
"খোদা, ওকে সুস্থভাবে বাড়িতে পৌছে দাও।"
মনে আছে আমি কি বলতাম?
"কখোনোই জানবে না তোমার জন্য কি অপেক্ষা করছে।"
ঠিক, বসো।
আচ্ছা, তো জীবন থেকে কী শিখলে?
-কিছু তো দেখেছিই।
-ওহ, তুমি দুঃখ, কষ্ট দেখেছো।
-আনন্দের কিছু দেখোনি?
-অবশ্যই, দেখেছি।
এটাই শুনতে চেয়েছিলাম।
-টিজি কোথায়?
-ওহ!
জনাব ওয়েদার গত এপ্রিলে
ঘুমের মধ্যে মারা গেছেন।
-মা, আমি সরি।
-ভেবো না।
আচ্ছা, এখোনো দুয়েকজন আছে।
বাকিরা নতুন।
বাকিদের মত তারাও শেষ সময়ের
জন্য অপেক্ষা করছে।
আমি খুশি যে তুমি ফিরে এসেছো।
এখন তোমার জন্য একটা চাকরি আর
একটা নারী খুঁজতে হবে।
আমার সাথে টেবিলে সাহায্য করো।
বেঞ্জামিন।
তুমি সময় নষ্ট করছ।
উনি শুনতে পান না।
আর তুমি মিসেস ডিসরাক্সের পুরানো রুমে থাকবে।
অন্যের রুমে থাকার পক্ষে তুমি অনেক বড়।
ঘরে ফেরা অনেক মজার।
দেখতে একরকম, গন্ধ একরকম,
অনুভিতিও সেই রকম।
আমি কি তোমাকে বলেছি যে,
আমি ৭ বার বজ্রাহত হয়েছি?
যখন আমি ট্রাকে বসে নিজের কাজ করছিলাম।
বোঝা যায় একমাত্র পরিবর্তন হলাম আমিই।
আর এক সকালে,
আমি ফেরার কিছুদিন পরেই...
ধন্যবাদ।
হেই।
-কুইনি আছেন?
-ডেইসী?
-আমি বেঞ্জামিন।
-বেঞ্জামিন?
ওহ খোদা!
তুমিই তো।
কেমন আছো?
অনেকদিন পরে দেখা।
অনেক কিছু জানার আছে।
কবে এসেছো?
কয়েক সপ্তাহ আগে।
কুইনির সাথে কথা হয়েছিলো,
বলল তুমি যুদ্ধে গেছো।
-আমরা তোমার জন্য অনেক চিন্তিত ছিলাম।
-অহ, আমি ঠিক আছি।
তুমিও অনেক সুন্দর হয়েছো।
তুমি চিঠি লেখা বন্ধ করে দিলে।
ওকে একটা মেয়ে হিসেবে দেখে গিয়েছিলাম।
এখন একটা মহিলা তার জায়গা নিয়েছে।
সে ছিলো আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর মহিলা।
সুন্দর।
সবচেয়ে সুন্দর।
-দাদী ফুলার কে মনে পড়ে?
-অবশ্যই।
-মারা গেছেন।
-শুনেছি, আমি দুঃখিত।
বিশ্বাসি হচ্ছে না, আমরা একসাথে এখানে।
ভাগ্যের লিখন।
না, না, কি যেনো বলে?
কিসমৎ।
ডাক্তার এডগার চাইসকে চেনো?
বিশ্বাস করি না...
সে বলে সব কিছুই আগে থেকে ঠিক করা।
কিন্তু আমার এটাকে ভাগ্য বলেই মনে হয়।
জানি না কিভাবে হলো,
কিন্তু হয়েছে বলে আমি খুশি।
ম্যানহাটান গেছো?
নদীর ওপারেই।
আমি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং দেখতে পাই...
আমার খাটের ওপর দাঁড়ালেই।
তোমার কি ব্যাপার?
কোথায় ছিলে তুমি?
সব কিছু বলো।
তুমি বলেছিলে তুমি রাশিয়ায় ছিলে।
আমি সবসময় রাশিয়ায় যেতে চাইতাম।
ওরা যেমন বলে, সেখানে কি তেমনই ঠান্ডা?
-বরফের চেয়েও দ্বিগুন।
-ওহ খোদা।
সবাই বলে তুমি আলাদা।
আসলেই তাই।
তুমি লিখেছো তুমি প্রেমে পড়েছো।
তারপর কী হলো?
যা হবার ছিলো।
এটার কথা মনে পড়ে?
বুড়ো ক্যাঙ্গারুর ছবি।
বিকাল ৫ টায়।
চলো একসাথে ডিনার করি।
তোমাকে বলেছি যে আমি ব্যালে নাচি?
একজন ভালো কোরিওগ্রাফার পেয়েছি।
উনি বলেন আমি ভালো লাইন পেয়েছি।
জানো এক রিহার্সালে এক ডান্সার পড়ে যায়...
আর তাকে প্রোডাকশনে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
বলতে চাচ্ছি, ভাবতে পারো,
একদম ক্লাসিকাল ব্যালেটে।
তাই সে ইচ্ছে করে পড়ে গিয়েছিলো।
এখন নাচের একটা
আলাদা নাম হলো- "শিল্পকলা"
যদিও ও একাই ছিলো না।
Lincoln Kirstein আছেন,
Lucia Chase আছেন, আর আছেন...
আছেন Agnes de Mille.
উনি একাই সব সমিতি ভেঙ্গে ফেলেন।
সব উপর নিচ গুলো।
নাচের আনুষ্ঠানিকতাই আসল নয়।
ডান্সারের অনুভুতিটাই আসল।
এই পৃথিবী সম্বন্ধে তিনি যা বললেন,
তার কিছুই বোঝা যায় না।
তার সব কথা আমি শুনতামও না।
নতুন, আধুনিক, আমেরিকান।
আমাদের ব্যাক্তিত্ব বুঝতে পারে।
ওহ, খোদা।
শুধু আমিই বলে যাচ্ছি।
না, না, আমার শুনতে ভালো লাগছে।
জানতাম না তুমি ধুমপান কর।
আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে।
আমি অনেক কিছুই করি।
নিউ ইয়র্কে মাঝে মাঝে সারারাত জেগে থাকি।
গুদামঘরের উপর দিয়ে সূর্য উঠতে দেখি।
সবসময়েই কিছু না কিছু করার থাকে।
আমি কালই চলে যাবো।
-এতো তাড়াতাড়ি?
-থাকতে তো ইচ্ছে করে।
ড্যান্সারদের কস্টিউম বা দৃশ্যের দরকার পড়ে না।
মাঝ মাঝে মনে হয় একদম @#*@ হয়ে নাচি।
ডি. এইচ. লরেন্সের বই পড়েছো?
-এইতো...
-তার বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভালোবাসা সম্পর্কিত বই।
আমাদের কোম্পানীতে বিশ্বাস বজায় রাখতে হয়।
*** সেইটার-ই অংশ।
জানো অনেক ড্যান্সারই সমকামী।
এক মেয়েও আমার সাথে শুতে চেয়েছিলো।
-আশাহত হলে নাকি?
-কোন ব্যাপারে?
কেউ আমার সাথে শুতে চেয়েছিলো?
তোমাকে যে কেউ পেতে চাইবে।
মনে হয় বেশীরভাগই তোমার সাথে শুতে চাইবে।
চলো ঘরে যাই।
বা কোন রুম খুঁজি।
-তোমার জ্যাকেট খুলে ফেলবো।
-জানি না, ডেইসি।
এমন না যে আমার এসব পছন্দ নয়।
মনে হয় তুমি হতাশ হবে।
ওহ, বেঞ্জামিন, আমি অনেক বৃদ্ধদের সাথেও থেকেছি।
তুমি কাল সকালে নিউইয়র্ক যাচ্ছো।
তোমার বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নেয়া উচিত।
-তুমি অনেক ছোট।
-আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে।
ডেইসী, আজ রাতে না।
আমরা গান শুনতে যেতে পারি।
জীবনে অনেক সুযোগ আসে।
কিছু কিছু হাতছাড়াও হয়ে যায়।
তোমাকে অনেক হ্যান্ডসাম আর
পরিচ্ছন্ন লাগছে।
শুনলাম ঝড় আমাদের পাশ কেটে বয়ে যাচ্ছে।
-খুব ভালো।
-আমি মায়ের সাথে কম্বলের নিচে থাকবো।
কিছুই বলল না...বেঞ্জামিন?
অনেক পরিবর্তন দেখা গেলো।
আমার মধ্যে।
আমার চুলগুলো বাদামী হয়ে উঠছিলো।
ঘ্রাণশক্তি ধারালো,
শ্রবণশক্তি সুক্ষ হচ্ছিলো।
আমি অনেক দ্রুত ও অনেক্ষন
ধরে হাঁটতে পারতাম।
যখন সবার বয়স বাড়ছিলো,
আমার বয়স কমছিলো।
ভেতরে আসো।
বেঞ্জামিন।
-মনে পড়ে আমাকে?
-অবশ্যই, জনাব বাটন।
-কি হয়েছে আপনার?
-ইনফেকশন হয়েছে।
ঘরে স্বাগতম।
আপনি এখনো সেজারাকের সাথে হুইস্কি খান?
মানুষ অভ্যাসের দাস।
এখোনো বুরবর্ন স্ট্রিটে ঘুরতে যান?
অনেকদিন হলো যাইনা।
মজার সময় ছিলো।
৪০ হাজার থেকে একেবারে হাফ-মিলিয়ন
বোতাম তৈরীর লক্ষ্যমাত্রায় পৌছে গিয়েছিলাম।
১০ গুন লোককে চাকরি দিয়েছি।
সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকে।
লজ্জার বিষয়।
যুদ্ধ বোতাম ইন্ডাস্ট্রির হাল আরো
ভালো করে দিয়েছে।
জানো,
আমি অসুস্থ।
জানিনা কতদিন বেঁচে থাকবো।
-শুনে কষ্ট পেলাম, জনাব বাটন।
-না...
কোন লোক নেই আমার,
নিজের দেখাশোনা নিজেই করি।
যদি কিছু মনে না করো,
যখনি সম্ভব হয়,
তোমার সঙ্গ আমার ভালো লাগবে।
অবশ্যই, যখনি পারবো।
বেঞ্জামিন, তুমি বোতাম সম্পর্কে কিছু জানো?
১২৪ বছর ধরে "বাটন বাটন" আমার
পরিবারের সাথে জড়িয়ে আছে।
আমার দাদা দর্জি ছিলেন,
রিচমন্ডে একটা ছোট দোকান চালাতেন।
গৃহযুদ্ধের পরে নিউ অরলিন্সে চলে আসেন।
দাদার স্বপ্ন ছিলো নিজেরাই বাটন তৈরী করবেন।
তারপর সে দর্জির দোকান পরিণত হলো এটাতে।
আর আজ আমি একটু সেলাইও করতে পারি না।
সুন্দর।
ভালোই করেছন।
আপনার জন্য কি করতে পারি, জনাব বাটন?
বেঞ্জামিন, তুমি আমার ছেলে।
আগে বলিনি সেজন্য মাফ চাইছি।
যেদিন বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলো সেইদিন তুমি জন্মালে।
তোমার মা তোমাকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেলেন।
আমার তোমাকে উটকো ঝামেলা মনে হলো।
তোমার মাকে কথা দিয়েছিলাম,
আমি তোমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।
তোমাকে রেখে আসা উচিত হয়নি।
মা?
লেক প্নচারট্রেইনের উপর সামার হাউস।
যখন বালক ছিলাম,
সবার আগে আমি ঘুম থেকে উঠতাম।
এরপর দৌড়ে নিচে গিয়ে সকালের শুরুটা দেখতাম।
যেনো পুরো পৃথিবীর একমাত্র জীবিত মানুষ আমি।
প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পরে গেলাম।
তোমার মায়ের নাম ছিলো, ক্যারোলিন মারফি।
তোমার দাদার রান্নাঘরে কাজ করতো।
ডাব্লিন থেকে এসেছে।
১৯০৩ সালে ক্যারোলিন তার
ভাই বোনের সাথে এখানে এসে থাকতে শুরু করলো।
নিউ অরলিন্সে।
আমি বার বার কিচেনে যাবার সুযোগ খুঁজতাম।
তাকে একবার দেখার জন্য।
২৫শে এপ্রিল, ১৯১৮।
আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন।
ওইদিন আমি তোমার মাকে বিয়ে করি।
আগে কেনো বলেননি?
আমি আমার সব সম্পত্তি
তোমাকে দিতে চাইছিলাম।
-আমাকে যেতে হবে।
-কোথায়?
বাসায়।
মনে করে কি নিজেকে?
মনে হয় তার সম্পত্তির লোভ দেখালেই...
...সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে?
আর আমিও তার বন্ধু হয়ে যাবো?
মতলব মোটেও সুবিধার না।
খোদা সাক্ষী,
মতলব মোটেও ভালো না।
তোমার সাথে মাত্র ১৮ ডলার ছিল,
যেদিন আমি তোমাকে খুঁজে পেলাম।
ময়লা ১৮ ডলার।
-আর একটা নোংরা ড্যাপার।
-গুড নাইট, মা।
গুড নাইট, বেইবি।
তোমাকে কি আমি বলেছি যে,
আমি ৭ বার বজ্রাহত হয়েছি?
একবার আমি আমার কুকুরের সাথে রাস্তায় হাটছিলাম।
আমার এক চোখ অন্ধ,
একটু বধিরও।
মাঝে মাঝে সব কিছু চক্কর মেরে ওঠে,
চিন্তাভাবনাও সব তালগোল পেকে যায়।
কিন্তু একটা কথা জানো?
খোদা আমাক বারংবার মনে করাচ্ছেন যে,
আমি ভাগ্যবান যে আমি জীবিত।
ঝড় আসছে।
সাহায্য করতে পারি, স্যার?
সিঁড়ি বেয়ে উঠে প্রথম শোবার ঘর।
ধন্যবাদ।
উঠে পড়ুন।
বের হবার কাপড় পড়ে নিন।
ওটা আসছে।
ধন্যবাদ।
কখোনো তুমি পাগল কুকুরের মতো হয়ে যাবে।
কখোনো ওয়াদা করবে,
কখোনো ভাগ্যর দোষ দেবে।
কিন্তু যখন যাবার সময় হবে,
তোমাকে চলে যেতেই হবে।
সুন্দর মৃত্যু আয়োজন।
তোমার মায়ের পাশেই তাকে কবর দেয়া হবে।
আমার মা তো তুমিই।
আমার সন্তান।
আমি কখোনো নিউইয়র্ক দেখিনি।
মুভির নামঃ দি কিউরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন
অনুবাদকঃ নাজমুল হোসেন শুভ।
যোগাযোগঃ tnyme.com/nazmul
-মাফ করবেন, আমি ডেইসীর বন্ধু।
-এইদিকে।
-ডেইসীর বন্ধু এসেছে, ডেইসী! ডেইসী!
-হ্যাঁ?
-কাপড় লাগবে।
-কেউ কি আমাকে খুঁজছে?
-বেঞ্জামিন?
-হাই।
-এখানে কি করছো?
-মনে হলো একবার দেখা করে যাই।
তোমার সাথে একটু সময় কাটাই,
যদি সময় পাও।
একটা ফোন করে আস্তে পারতে,
অবাক করে দিলে।
-এগুলো ফেলে দিতেপারো।
-না! এগুলো সুন্দর।
তোমার থেকে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না।
সম্মোহিত করে রেখেছিলে মনে হয়।
ধন্যবাদ।
শুনে ভালো লাগলো।
আমি কাপড় চেঞ্জ করে আসি।
আমাদের একটা গ্রুপ পার্টি করছে।
-আসতে চাও?
-একজন রেস্টুরেন্টে দাওয়াত দিয়েছে।
তুমি মজা করতে পারো।
আমি রিজার্ভ করে রেখেছি।
শো এর পরে সব ড্যান্সাররা চলে গেলে তুমি...
তুমি আমাদের সাথে আসতে পারো।
আমি কাপড় বদলে আসছি?
ব্যালেট রাসেসের জন্য উনি কোরিওগ্রাফ করেন।
সে অসাধারণ।
তুমি অসাধারণ ছিলে।
সুইটি।
ও ডেভিড।
আমাদের সাথে নাঁচে।
-উনি বেঞ্জামিন।
-কে?
-বলেছিলাম ওর কথা।
-ও, হ্যাঁ, কেমন আছেন?
-আমি একটু পানীয় নিয়ে আসছি।
-আচ্ছা, ধন্যবাদ।
আপনি ওর দাদীর বন্ধু?
নাকি সেইরকমই কিছু।
সেইরকমই কিছু।
হেই, মাফ করবেন।
আসো।
হেই!
আমার মনেই ছিলো না যে,
তুমি এসেছো।
ওহ! বেনজামিন!
কি আশা করেছিলে তুমি?
সব কিছু ছেড়ে দেবো?
এটাই আমার জীবন।
ডাউনটাউন যাচ্ছ।
আমাদের সাথে চলো,
ভালো সময় কাটাবে।
অনেক মজার লোকজন,
মিউজিশিয়ান আছে।
তোমার এসব করতে হবে না।
আমারই ভুল।
ফোন করে আসা উচিত ছিলো।
ভেবেছিলাম আমি আসবো...
...আর তোমাকে ছাড়িয়ে আনবো।
-ডেইসী! চলো!
-আসছি।
ভালোই তো।
ভালোবাসো ওকে?
মনে হয়।
আমি তোমাকে দেখে খুশি।
বাড়িতে দেখা হবে।
আচ্ছা।
শো টা ভালো লেগেছে।
ও বলতে এসেছিলো যে ওর বাবা মারা গেছে।
-তুমি মনে হয় জানতেও না।
-আমার বয়স ২৩ ছিলো।
জানলেও কিচ্ছু আসে যায় না।
তারপর?
ব্যাগের সামনের দিকে কয়েকটা ছবি আছে।
আমি অনেক ভালো ড্যান্সার ছিলাম।
৫ বছর ধরে আমি...
আমি সব জায়গায় নেচেছি।
লন্ডন, ভিয়েনা, প্রাগ।
এগুলো তো আগে দেখিনি।
মা।
তুমি নাচতে এটা তো আগে বলো নি।
আমিই একমাত্র আমেরিকান ছিলাম।
যে বলসই তে নাচার আমন্ত্রণ পেয়েছিলো।
অনেক গৌরবময় ছিলো।
কিন্তু আমি বেঞ্জামিনকে ভুলতে পারিনি।
আর নিজেকে বলতে শুনলাম...
গুড নাইট, বেঞ্জামিন।
-গুড নাইট ডেইসী।
-সেও বলেছিলো?
জীবন অতটা কঠিন ছিলো না।
আমি কি যেনো খুঁজছিলাম।
বেঞ্জামিন?
মিসেস লা টরেনু মারা গেছেন।
-জনাব বেঞ্জামিন বাটনের জন্য চিঠি।
-আমাকে দাও।
ধন্যবাদ।
মিস ডেইসী ফুলার।
-এক মিনিট বসুন।
-অবশ্যই।
মাঝ্বে মাঝে আমরা ধাক্কা খাবার আগে বুঝতে পারি না।
ঘটনা হোক বা দুর্ঘটনা,
আমাদের তখন কিছুই করার থাকে না।
প্যারিসের এক মহিলা শপিং-এ যাচ্ছিলেন।
কিন্তু তার কোট নিতে ভুলে গেলেন
আর বাসায় চলে আসলেন।
কোট নিতে আসার সময় তার ফোন বেজে উঠলো।
তিনি কয়েক মিনিট কথা বলার জন্য থামলেন।
যখন তিনি ফোনে কথা বলছিলেন,
ডেইসী প্যারিস অপেরা হাউসের জন্য প্র্যাক্টিস করছিলো।
রিহারসিং-এর সময় মহিলা ফোন রেখে দিলেন।
আর বাইরে আসলেন ট্যাক্সি ধরতে।
ট্যাক্সি ড্রাইভার একটু আগে থেমে,
এক কাপ কফি খেলেন।
সে সময় ডেইসি অনুশীলন করছিলো।
আর ট্যাক্সি ড্রাইভার,
যে আগে থেমে,
কফি খাচ্ছিলো,
সে মেয়েটাকে শপিং-এ নিয়ে গেলো।
সে আগের ট্যাক্সিটা ধরতে পারলো না।
একজনের রাস্তা পার হবার জন্য
ট্যাক্সিটার থামতেই হত।
যে পাঁচ মিনিট আগে কাজ থেকে এসেছে
অন্যান্য দিনের মত।
সে অ্যালার্ম দিতে ভুলে যায়।
যখন সে দেরিতে কাজে যাচ্ছিলো,
এবং রাস্তা পার হচ্ছিলো,
ডেইসী প্র্যাক্টিস শেষ করে গোসল করছিলো।
যখন ডেইসী গোসল করছিলো,
ট্যাক্সিটা বুটিক হাউসের বাইরে
মহিলাটির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো।
র্যাপিং করা হয়নি তখনো।
কারন যার এটা র্যাপিং করার কথা...
তার গতরাতে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকাপ হয়ে গেছে।
যখন প্যাকেটটা র্যাপ করা হলো,
মহিলা ট্যাক্সিতে ফিরল...
যেটা ডেলিভারি ট্রাকের কারনে থামতে হলো।
তখন ডেইসী কাপড় বদলাচ্ছিলো।
ডেলিভারী ট্রাক সরার পরে,
ট্যাক্সিটা যেতে পারলো।
তখন ডেইসীর কাপড় পরা শেষ।
তার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলো,
যে তার জুতার ফিতা বাঁধছিল।
যখন ট্যাক্সিটা ট্রাফিক লাইটে থামল...
ডেইসী আর তার বন্ধু
থিয়েটার থেকে বের হল।
আর এর একটা ঘটনাও যদি অন্যরকম হত,
যদি জুতার ফিতা না খুলতো,
যদি ডেলিভারি ট্রাক একটু আগে যেতো,
বা প্যাকেট র্যাপ করা হতো,
মেয়েটার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকাপ না হতো,
বা সেই লোকটা অ্যালার্ম সেট করে ৫ মিনিট আগে উঠতো,
বা সেই ট্যাক্সি ড্রাইভার কফি না খেতো,
বা সেই মহিলার কোট নিতে মনে থাকতো,
আর আগেই ট্যাক্সিতে উঠতো,
তাহলে ডেইসী আর তার বন্ধু রাস্তা পার হতে পারতো।
আর ট্যাক্সিটা চলে যেতে পারতো।
কিন্তু সব নকশা অনুযায়ীই হলো,
কয়েকটা অসম্পর্কিত ঘটনা,
যাতে এদের কারোরই হাত নেই,
ট্যাক্সিটা যেতে পারলো না।
ড্রাইভার অন্যমনষ্ক হয়ে পড়লো।
ডেইসী!
আর ট্যাক্সিটা ডেইসীকে ধাক্কা মারলো।
ডেইসী! সাহায্য লাগবে!
তার পা ভেঙ্গে গেলো!
ডেইসী?
-কে বলল?
-তোমার বন্ধু ফোন করেছিলো।
দয়া করে আমাকে দেখতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
আমার এরকম হলে তুমিও তাই করতে।
খোদা!
নিজেকে দেখো।
একদম ঠিকঠাক।
তুমি না আসলেই ভালো হত।
আমার এই অবস্থা তোমাকে দেখাতে চাই না।
তার পা পাঁচ জায়গায় ভেঙ্গেছে।
থেরাপি আর সময়ের সাথে
সে হয়তো হাঁটতে পারবে।
কিন্তু নাচতে কখোনোই পারবে না।
আমি তোমাকে বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছি।
-আমি তোমার দেখাশোনা করবো।
-আমি নিউ অরলিন্স যাবো না।
তবে আমি তোমার সাথে প্যারিসেই থাকবো।
কেন বুঝতে চাইছো না?
আমি তোমার সাহায্য চাই না।
আমি জানি আমি কষ্ট পাচ্ছি,
কিন্তু আমি তোমার সাথে থাকবো না।
নিউইয়র্কেও এ কথা বলতে চেয়েছি,
তুমি শোনোনি।
তুমি মন পরিবর্তন করতে পারো।
আমরা এখন আর বাচ্চা নেই বেঞ্জামিন।
আমার জীবন থেকে সরে যাও।
আমি অনেক নিষ্ঠুর ছিলাম।
বোঝে না সে বোঝে না।
আমার এই অবস্থা তাকে দেখাতে চাই না।
আমি চলে যাই নি।
আমি প্যারিসেই তার দেখাশোনার জন্য থেকে গেলাম।
আমি জানতাম না।
ওহ! নার্সকে একটু ডেকে দাও।
আমি হাটা শিখলাম।
লর্ডসের ট্রেন ধরলাম।
দেখি। সব ঠিক আছে।
পাল্স রেট নামছে।
তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
-তুমি ঠিক আছো তো?
-হ্যাঁ।
সে বলল, "আমি ঘরে ফিরে এলাম"
আর তারপর অনেক পৃষ্ঠা ছেঁড়া।
"আমি ঘরের শব্দ শুনেছি।"
এটাতো আগেই পড়লাম।
সে...
এটার ওপরে কিছু পড়েছিলো,
পড়াই যাচ্ছে না।
জাহাজ সম্পর্কে কিছু।
কোন মানে হয়?
আমি আমার বাবার লেক হাউসের একটা
পুরোনো নৌকা চালানো শিখেছি।
মিথ্যে বলবো না।
আমি দুই একজন মেয়ের সঙ্গ উপভোগ করেছি।
বা তিন জন।
জানিনা কেন স্যাম ভাইয়া,
কাল আবার আসবে।
মা।
আর ১৯৬২ সালের বসন্তে,
সে ফিরে এলো।
-তুমি জানতে চাও আমি কোথায় ছিলাম?
-না।
কিছু না বলে কয়েই কোথায় গায়েব হয়ে গিয়েছিলে?
নিজের জন্য কিছু করতে চাইছিলাম।
তুমি স্বার্থপর হও,
এটা আশা করিনি।
মনে হয় আমি ভুল নই।
আমি মানুষ চিনি।
-গুড নাইট, মা।
-গুড নাইট, বেইবি।
মজা করো।
-ও দুটো শব্দ তো বললে না।
-নষ্ট করতে চাইনি।
-শুবে আমার সাথে?
-অবশ্যই।
আমি তাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে চাইলাম।
আমরা উপসাগর ধরে ফ্লোরিডায় আসলাম।
আমি খুশি যে,
আমরা একে অপরকে ২৬ বছর বয়সে পাইনি।
-কেনো বলছো এটা?
-কারণ আমার বয়স কম ছিলো।
আর তুমি বুড়ো ছিলে।
যা হবার তাই হবে।
আমার তোমার সাথে থাকতে ভালো লাগবে।
বাজি ধরে বলছি আমি তোমার
থেকেও বেশি দিন বাঁচবো।
আমি বাজি ধরছি তুমি পারবে না।
আমার চামড়া কুচঁকে যাচ্ছে।
আমার চেহারার বলিরেখা বাড়ছে।
যেটা মোটেও ভালো হচ্ছে না।
তোমার বলিরেখা আমার ভালো লাগে।
সবগুলোই।
বয়স কমার অনুভূতিটা কেমন?
বলতে পারবো না।
নিজের চোখে দেখে বোঝা অসম্ভব।
আমি বুড়ো হয়ে গেলেও কি,
তুমি আমায় ভালোবাসবে?
আমি যখন বাচ্চা হয়ে বিছানায় হিসু করবো,
তখনো কি তুমি আমায় ভালোবাসবে?
যখন আমি সিঁড়ি বেয়ে নামতে ভয় পাবো।
কি?
-কি ভাবছো?
-আমি ভাবছি সব ক্ষণস্থায়ী কেন?
এটা কী লজ্জার বিষয় না?
কিছু জিনিস আছে যা দীর্ঘস্থায়ী।
-শুভ রাত্রী, ডেইসী।
-শুভ রাত্রী, বেঞ্জামিন।
মা?
-বাবার সাথে তোমার কবে দেখা হলো?
-তার কিছুদিন পরেই।
-তুমি কি তাকে বেঞ্জামিনের কথা বলেছো?
-সে জানতো।
মা?
কুইনি?
হ্যালো?
ওহ! হাই! মিসেস কার্টার,আমি বেঞ্জামিন।
সবাই কোথায়?
ওহ! বেঞ্জামিন,
কুইনি মারা গেছে। আমি দুঃখিত।
অপূরণীয় ক্ষতির জন্য ক্ষমা চাইছি।
উনি অনেক ভালো মহিলা ছিলেন।
আমরা শোক প্রকাশ করছি।
আমরা তাকে জনাব ওয়েদারের পাশে
দাফন করলাম।
যদিও অনেক স্মৃতিবিজরিত,
আমি বাবার বাড়িটা বিক্রি করে দিলাম।
বাড়িটা খুব সুন্দর, ডারলিং।
এখানে থাকতে আমাদের ভালোই লাগবে।
কত বছরের স্মৃতি জড়িত এই বাড়িটার সাথে?
তার এই বাড়িতে জন্মেছেন।
-চলো।
-মাস্টার সুইটটা দেখবে চলো।
আমরা একটা দোতলা বাড়ি কিনলাম।
বাড়িটা আমার প্রিয় ছিলো।
কয়লার মত ঘ্রাণ আসতো বাড়িটা থেকে।
থেমো না...পড়তে থাকো।
সেটা ছিলো আমার জীবনের সবচেয়ে
আনন্দের দিনের একটা।
ফার্নিচারের পরোয়া করতাম না।
আমরা ঘরের মধ্যেই পিকনিক করতাম।
যখন ইচ্ছা তখন খেতাম।
চাইলে সারারাত জেগে থাকতাম।
রুটিনের পরোয়া করতাম না।
ঘুমানো বা ঘুম থেকে ওঠার কোন
নির্দিষ্ট সময় ছিলো না।
আমরা ম্যাট্রেসেই ঘুমাতাম।
আমাদের প্রতিবেশী, মিসেস ভ্যান ড্যাম,
একজন ডাক্তার ছিলেন।
পাবলিক পুল থেকে আমরা ৪ ব্লক দূরে থাকতাম।
তুমি আর মাত্র কয়েক বছর সাতার কাটতে পারবে।
কিন্তু তুমি স্পেশাল আর একটু অন্যরকম।
সে হিসেবে সময় অল্পই বাকি।
তাই, যাই হোক না কেন,
সেখানেই থাকো যেখানে তোমার থাকা উচিত।
আমার বুড়ো হতে ভালো লাগে না।
পানিতে ক্লোরিন অনেক বেশি।
কথা দিচ্ছি, আমি আর কখনো
নিজেকে নিচু ভাববো না।
আর তার পর থেকেই,
কেউ চিরকাল পারফেক্ট থাকে না।
সে জীবনে আনন্দ খুঁজে পেলো।
সে একটা স্টুডিও খুলল,
আর বাচ্চা মেয়েদের নাচতে শেখালো।
আর টেন্ডূও।
এদিক দিয়ে আসো,
ঘোরো ঘোরো, সুন্দর।
-গুড নাইট, মিস ডেইসী।
-গুড নাইট।
দেখতে ভালোই লাগছিলো।
লাইন সুন্দর,
তো নাচও সুন্দর।
সঠিক শরীর।
কখোনো না কখোনো, সেই উৎকর্ষতা হারিয়ে যায়,
যেটা আর ফেরত আসে না।
তুমি ১৯১৮ সালে জন্মেছিলে,
৪৯ বছর আগে।
আমার বয়স ৪৩।
আমাদের বয়স একই মনে হয়।
-আমরা মাঝামাঝি এসে পড়েছি।
-আমরা একে অপরকে ধরে ফেলেছি।
দাঁড়াও।
আমাদের এই অবস্থাটাকে মনে রাখতে দাও।
আমি অন্তস্বত্বা।
নার্স বলল, আমার ছেলে হবে।
কিন্তু আমার মনে হয় আমার মেয়ে হবে।
-জানি তুমি ভয় পাচ্ছ।
-আমি লুকোচ্ছি না।
ওকে।
-সবচেয়ে বড় ভয়টা কি নিয়ে?
-যদি বাচ্চাটা আমার মত হয়।
তাহলে আমি সবচেয়ে বেশী খুশী হবো।
আমি বাবা হবো কী করে,
যেখানে আমি উল্টোধারায় চলছি?
বাচ্চা হওয়াটা মোটেও ভালো লাগবে না।
আমি কারো বোঝা হতে চাই না।
আমরা সবাই ডায়াপার পরেই মারা যাই।
সমস্যা হবে না।
আমিতো অন্তত এটাই চাই।
তুমি যা চাও,
আমিও তাই চাই।
বুঝতে পারছি না,
এটা মেনে নেবো কি করে?
একজন অন্ধকে কি তুমি বলবে,
যে সে বাচ্চা নিতে পারবে না?
এমনই।
যতদিন পারো ততদিনই তুমি বাবা হয়ে থাকবে।
এটাই পরিণতি।
আর আমি তা মেনে নিয়েছি।
তুমিই আমার জীবনের সব।
আমাকে টয়লেটে যেতে হবে।
ইংলিশ চ্যানেল সাতারু হিসেবে
সবচেয়ে সবচেয়ে বৃদ্ধ মহিলা...
আজ ক্যালাইসে পৌছেছেন।
-রাখো।
-...তিনি সাঁতরেছেন...
৩৪ ঘন্টা, ২২ মিনিট, ১৪ সেকেন্ড।
৬৮ বছর বয়সী এলিজাবেথ অ্যাবোট,
গ্রিনুইচে ৫টা ৩৮শে পৌছেছেন,
অত্যন্ত খুশি মনে।
আপনার এই সাফল্যকে কিভাব ব্যাখ্যা করবেন?
আমার মনে হচ্ছে...
সবকিছুই সম্ভব।
-এটুকুই?
-হ্যাঁ, ধন্যবাদ।
-তুমি তৈরী?
-ধন্যবাদ।
সবাইকে ধন্যবাদ।
-হ্যাঁ।
-আপনি দয়ালু।
বসন্তের একদিন, অন্যান্য দিনের মতই চলছিলো...
আমি একঘন্টার মধ্যেই এসে পড়বো।
সোনা?
একটা অ্যাম্বুলেন্স ডাকো!
বাচ্চাটা বের হয়ে আসছে।
অপারেটর আমার একটা অ্যাম্বুলেন্স লাগবে।
-এখনই বাচ্চা হবে।
-২৭১৪, নেপোলিয়ন।
শ্বাস নাও!
গভীর শ্বাস নাও, ধাক্কা মারো।
এইতো।
সব ঠিক আছে।
তার একটা স্বাস্থ্যবান মেয়ে বাচ্চা হয়েছে।
সোনা?
সে ৫ পাউন্ড, ৪ আউন্সের একটা বাচ্চার জন্ম দিলো।
পা কয়টা গুনেছো?
সে একদম ঠিক আছে।
আমরা তার মায়ের নামে নাম রাখলাম, ক্যারোলিন।
বেঞ্জামিন আমার বাবা?
এটা তুমি আমাকে এভাবে বলছ?
মাফ করবেন।
...ঝড়ের সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত মনে হচ্ছে।
যদিও এটা কঠিন,
তাও বলছি, এখানে ধূমপান নিষিদ্ধ।
কেউ বলতে পারছে না,
ঝড় কোথায় আঘাত হানবে।
তবুও আমরা একটা ভবিষ্যৎবাণী করতে পারি...
এটা এদিক দিয়েই আসছে।
তুমি ডক্টরের কথা মত সুস্থ স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে ঊঠলে।
তোমাকে তার জন্য সত্যিকারের বাবা খুঁজতে হবে।
কি বলছো এসব?
তার এমন কাউকে দরকার যার সাথে ও
বড় হতে পারে।
ও সব মেনে নেবে,
ও তোমাকে ভালোবাসে।
সোনা, ওর খেলার সাথী নয়,
একজন বাবার প্রয়োজন।
-কারণটা কি আমি?
-অবশ্যই না।
-আমি বুড়ো হয়ে যাওয়াটা তোমার অসহ্য লাগছে?
-মোটেই তা নয়।
-তবে কি বলতে চাও?
-তুমি আমাদের দু'জনের খেয়াল রাখতে পারবে না।
এটা তোমার প্রথম জন্মদিন,
একটা পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।
ঘর বাচ্চা-কাচ্চায় ভর্তি।
-কেমন আছো?
-হেই, ম্যান।
কিছুদিন পরেই দেখবে, ও হাইস্কুলে উঠে গেছে,
প্রেম করা শুরু করেছে।
আমি সামার হাউসটা বিক্রি করে দিলাম।
"বাটন বাটন" কোম্পানী বেচে দিলাম।
বাবার সেইলবোট বেঁচলাম।
আর সব টাকা একাউন্টে জমা করলাম।
যাতে তুমি আর তোমার মা,
কিছুদিন তাই দিয়ে চালাতে পারো।
আমি চলে গেলাম,
যাতে তোমার আমার কথা মনেও না পড়ে।
কিছু কাপড়-চোপড় পিঠে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম।
আমি এটা আর পড়তে চাই না।
আমাকে বলবে সে কোথায় গেছে?
জানি না।
এটা আমার জন্য লেখা। ১৯৭০, আমার বয়স ২।
শুভ জন্মদিন।
যদি তোমাকে গুড নাইট বলতে পারতাম!
এই সবগুলো আমাকে লেখা।
৫ বছর।
যদি তোমাকে প্রথমবার স্কুলে নিয়ে যেতে পারতাম!
৬ বছর!
যদি তোমাকে পিয়ানো বাজানো শেখাতে পারতাম!
১৯৮১,
১৩ বছর।
যদি তোমাকে ছেলেদের পেছনে ঘুরতে বারন করতে পারতাম!
যদি আমার কষ্টের সময় তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারতাম!
যদি তোমার বাবা হতে পারতাম!
যার জায়গা অন্য কেউ নিতে পারবে না!
মনে হয় সে ইন্ডিয়া চলে গেছিলো।
যাই হোক না কেনো,
কখোনোই দেরী হয়ে যায় না,
-...বা, আমার ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি...
-...বা, একটু বেশীই তাড়াতাড়ি।
তা হবার জন্য,
যা তুমি হতে চাও।
সেটা করার কোন বয়স নেই,
যখন চাও, তখনই শুরু করো।
তুমি বদলাতেও পারো, বা একইরকম থাকতে পারো।
কোন নির্দিষ্ট নিয়মের তোয়াক্কা কোরনা।
জীবনটা খুব ভালো,
আবার খুব খারাপও বানিয়ে ফেলা যায়।
আশা করি তোমার জীবনটা ভালো হবে।
আশা করি তুমি সেটাই করবে,
যেটার প্রতি তোমার আগ্রহ রয়েছে।
সবসময় নতুন কিছু অনুভবের
চেষ্টা করবে।
বিভিন্ন মতভেদের মানুষের সাথে মিলিত হবে।
সেই জীবন যাপন করবে,
যাতে তোমার গর্ব হয়।
আর যদি না পারো,
আশা করি নিজেকে শক্তি যোগাবে,
-সব আবার শুরু করবার জন্য।
-একেবার শুরু থেকে।
অনেকদিন হল চলে গেছে ও।
পরের বৃহস্পতিবার দেখা হবে।
-গুড নাইট, মিস ডেইসী।
-ওহ! গুড নাইট, সোনা।
আমি দুঃখিত, আমি বন্ধ করে দেবো।
কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
কাউকে নিতে এসেছেন?
কেন ফিরে এলে?
মা?
তুমি তৈরী?
মা, কি হয়েছে?
এক কাছের বন্ধুর কাছ থেকে
একটা কষ্টের কাহিনী শুনছিলাম।
যাকে অনেকদিন যাবৎ দেখিনি আমি।
ক্যারোলিন, উনি বেঞ্জামিন।
তুমি একদম বাচ্চা থাকতে ওকে দেখেছিলে।
-হাই।
-হাই।
হেই।
-ওহ! আমি দুঃখিত। আমি ভেবেছি তোমার কাজ শেষ।
-ওহ! ও আমার পরিবারের বন্ধু।
বেঞ্জামিন বাটন, উনি আমার স্বামী রবার্ট।
-কেমন আছেন?
-এইতো।
দেখা হয়ে ভালো লাগলো।
-আমরা গারিতে আছি, ডারলিং।
-আচ্ছা।
বাই।
আমি তালা মেরেই আসছি।
ওয়াও।
ও তার মায়ের মতই সুন্দরী।
-ও কি নাচে?
-বেশী ভালো না।
মনে হয় ওর এই দিকটা আমার মতই হয়েছে।
খুব ভালো মেয়ে।
মনটা একটু উড়ু উড়ু।
১২ বছর বয়সে এটা অস্বাভাবিক কিছু না।
তার অনেক স্বভাবই আমাকে
তোমার কথা মনে করিয়ে দেয়।
আমার স্বামী বিপত্নিক,
...মানে ছিলো আর কি।
সে খুব দয়ালু, বুদ্ধিমান,
আর রোমাঞ্চপ্রিয়।
-অসাধারণ বাবাও বটে।
-ভালো।
-তোমাকে অনেক তরুণ লাগছে।
-শুধু বাইরে থেকেই।
তুমি ঠিক বলতে।
আমি তোমাদের দুজনকে সামলাতে পারতাম না।
আমি অত শক্তি নেই।
তো, তুমি আছো কোথায়?
করছো কী?
আমি এভিনিউয়ের পনচ্যারট্রেইনের হোটেলে থাকি।
আমি জানি না কি করবো।
কিন্তু...
ওরা অপেক্ষা করছে।
মনে পড়েছে। ওটা সেই ছিলো?
হারিকেন ঝড় দিক বদলেছে।
কিছুক্ষনের মধ্যে এই স্থলে আঘাত হানতে পারে।
-আমার কি কিছু করতে হবে?
-আয়োজন শেষ...
মানুষ সরানোর কাজ হচ্ছে।
না...আমরা থাকছি।
কিছু পরিবর্তন হলে তোমাকে জানাব।
সেই রাতে,
আমি বসে ভাবছিলাম কেন ফিরে এলাম।
দরজায় কেউ কড়া নাড়লো।
আসো।
ঠিক আছো তো?
আমি দুঃখিত।
আমি জানি না আমি কি করছি এখানে।
কিছুই চিরস্থায়ী নয়।
তোমাকে ভালো না বেসে
থাকতে পারি নি আমি।
কিন্তু বেঞ্জামিন,
আমি বুড়ো হয়ে গেছি।
কিছু জিনিস কখনোই ভুলতে পারবে না।
তাই কেউ মনে করে...
...সে প্রথমবারের মত বন্দী কারাগারে।
আমি বলছি,
আমিও এ বিষয়ে অসহায়।
কারণ,
যদিও ওরা তোমাকে...
"বর্ষসেরা মানব" পুরষ্কার না দেয়,
অন্তত এটাতো করতে পারে,
যে তোমাকে দাগী আসামীর লিস্ট থেকে
বাদ দিতে পারে।
আমার যা মনে হয়,
এটা মোটেও ঠিক হচ্ছে না।
শুভরাত্রি, বেঞ্জামিন।
শুভরাত্রি, ডেইসী।
আর আমি তাকে চলে যেতে দেখলাম।
এই তার শেষ লেখা।
তোমার বাবা মারা যাবার কিছুদিন পরে,
একটা কল আসে।
হ্যালো।
হ্যাঁ, বলছি।
দুঃখিত, বুঝলাম না।
ঐ কোণার বাড়িটা।
ভেতরে আসুন।
-আমি ডেইসী ফুলার।
-আমি ডেভিড হারনান্দেজ,
"Child Welfare Service"এর
"The Orleans Parish Department"-এর সাথে আছি।
ও একটা দাগী আসামীদের বিল্ডিঙে থাকতো।
পুলিশ ওর সাথে এটা পেয়েছে।
এই ঠিকানা সহ এতে অনেকবার উল্লেখ আছে।
তার শরীর খারাপ হচ্ছিলো।
তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো।
মনে হয় না সে জানে, যে সে কে,
বা কোথায় আছে। বিভ্রান্ত ছিলো।
আমি জনাব হারনান্দেজকে বললাম,
যে বেঞ্জামিন আমাদেরই একজন।
যদি তার কোনো জায়গায় থাকতে হয়,
তবে এটাই সবচেয়ে ভালো জায়গা।
বেঞ্জামিন?
তুমি খুব ভালো বাজিয়েছো।
মনে হয় না ও জানে যে ও কি করছে।
ও নিজেও জানেনা,
ও কাকে চেনে আর কাকে চেনে না।
ডক্টর বলছিলো,
যদি তারা ঠিক ভাবে থাকে,
ও স্মৃতিভ্রমে আক্রান্ত হচ্ছে।
মনে পড়ে আমায়?
আমি ডেইসী।
আমি বেঞ্জামিন।
দেখা হয়ে ভালো লাগলো বেঞ্জামিন।
তোমার পাশ বসলে কিছু মনে করবে?
তোমার পিয়ানো বাজানো শুনতে চাই।
আমি কি আপনাকে চিনি?
-আমি নাস্তা খাবো।
-আর প্রতিটা দিন,
আমার তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাখতে হয়।
-না, আমি খাইনি।
-তুমি এই মাত্র খেয়ে উঠলে!
ভেবোনা যে,
আমি জানি না তোমরা কি করছো।
মিথ্যুক কোথাকার!
বিশ্বাসই করতে চায় না যে,
ও এইমাত্র নাস্তা করেছে।
এখন, চলো না একটু...
অন্যকিছু খুঁজি করার জন্য।
কেন যেন মনে হচ্ছে,
আমি অনেক কিছুই মনে করতে পারছি না।
কি রকম?
মনে হচ্ছে আমি একটা পুরো জীবন পার করে ফেলেছি।
কিন্তু আমি তার কিছু মনে করতে পারছি না।
আচ্ছা।
ভুলে যাওয়াটা কোন সমস্যা নয়।
অনেক সময় সে ভুলে যেত,
যে সে কোথায় আছে।
এইতো ও, ছাদের ওপরে।
এটা সহজ ছিলো না।
-বেঞ্জামিন।
-আমি সব দেখতে পাচ্ছি।
-আমি একটা বড় নদী দেখতে পারছি।
-ঠিক,
তুমি সব দেখতে পাচ্ছ, সোনা।
যেখানে মাকে দাফন করা হলো,
সেই কবরস্থানটাও দেখতে পাচ্ছি।
-আর অন্য অনেক লোককেও।
-আমি চাই তুমি নিচে নামো।
-যদি আমি উড়তে পারি তো কি হবে?
-আমি একজনকে জানি, যে উড়তে পারে।
নিচে নামো,
আমি তোমাকে তার কথা বলছি।
কেউ ওকে নামাও।
তখন ওর বয়স ৫।
যখন ওর সাথে প্রথমবার দেখা হয়,
ঠিক সেই বয়সী।
এটা হলো ওল্ড ম্যান ক্যাঙ্গারুর ছবি।
বিকাল ৫ টায়।
যখন সে তার হরিণী পা পালো।
দিন যেতে লাগলো।
বুঝলাম সে হাটতে ভুলে যাচ্ছে।
-আর কথা বলতেও ভুলে যাচ্ছে।
-আমার নাম কী?
আমি ডেইসী।
ডেইসী বলতে পারো?
২০০২ সালে,
ট্রেন স্টেশনে একটা নতুন ঘড়ি লাগানো হল।
আর ২০০৩-এর এক বসন্তে,
সে আমার দিকে তাকালো।
জানতাম যে ও জানে আমি কে।
আর তারপর সে চোখ বুজলো,
যেনো ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
-যদি আমি তাকে জানতাম!
-এখন তুমিও জানো।
আমার দেখে আসা উচিত যে,
কি হচ্ছে।
শুভ রাত্রি, বেঞ্জামিন।
লিভার ব্রেকের ওখানে বন্যা হতে যাচ্ছে।
নয় নম্বর ওয়ার্ডে।
কিছু মানুষ জন্মেছে,
নদীতীরে বসে থাকার জন্য।
কেউ বজ্রাহত হবার জন্য।
কারো রয়েছে গান শোনার ক্ষমতা।
কেউ আবার শিল্পীও।
কেউ সাতার কাটে।
কেউ বোতাম পারদর্শী।
কেউ শেক্সপিয়ার প্রেমী।
কেউ মমতাময়ী মা।
কেউ আবার নাচে পারদর্শী।
মুভির নামঃ দি কিউরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন
অনুবাদকঃ নাজমুল হোসেন শুভ।
যোগাযোগঃ tnyme.com/nazmul