Tip:
Highlight text to annotate it
X
জাকির নায়েকের একটি গুণ আছে,
যাতে অনেকেই মনে করে
তিনি খুব বুদ্ধিমান একজন
যে তিনি একটা পর পর অনেক তথ্য,
দ্রুতবেগে,
আবৃত্তি করতে পারে,
তার অসাধারণ মেধা থেকে
এইভাবে মনে করা হয়ে যে
বা! ইনি তো খুব জ্ঞানী মানুষ।
কিন্তু আমার এক বন্ধু বসে,
তার পাঁচ মিনিটের একটি উত্তর মূল্যায়ন করেছে,
তিনি বিবর্তনবান নিয়ে উত্তর দিচ্ছিলেন,
এবং সেই পাঁচ মিনিটে,
তিনি ২৫টিরও বেশী মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
যেমন ধরেন, তিনি বলেছেন’
কেলেট্রপিস্ট” নামে পৃথিবীতে কোন দ্বীপই নেই।
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জীতে
ডারউইন গিয়ে
সেই পাখিগুলো দেখেছেন।
এই পাখিগুলো কোন “কক্ষে ঠোকর দেয়” না;
নায়েক যেমন বলেন,
এরা বিভিন্ন বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করে।
প্রজাতিগুলোর মধ্যে ঠোঁটের দৈর্ঘ্য ছাড়াও
আরও অনেক পার্থক্য ডারউইন
পর্যবেক্ষণ করেছেন’
যার মধ্যে ছিল রং,
দেহের আকার, সঙ্গীর সাথে ব্যবহার,
গান
এবং খাদ্যাভ্যাস।
ডারউইন ১৪টি আলাদা প্রজাতির
ফিঞ্চ পাখির ঠোঁট পর্যবেক্ষণ করেছিলেন,
নায়েকের কথামতে শুধু এক প্রজাতির নয়।
এক এক প্রজাতির মধ্যে
কোন ঠোঁটের পার্থক্য নেই।
ডারউইনের সমস্ত চিঠি,
প্রকাশিত
এমনকি ইন্টার্নেটে সার্চ করে দেখা যায়,
এবং সেখানে
থমাস থ্রমটন নামে কারো দলীল নেই।
ডারউইন স্বীকার করেছেন যে মিসিং লিংক ছিল,
কিন্তু তার মানে এই নয় যে
তিনি তার নিজ তত্ত্ব বিশ্বাস করেননি’
এমনকি, তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে কোথায় এই মিসিং লিংগুলো পাওয়া যাবে।
খ্রীষ্টধর্মের চার্চ কখনও বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে ছিল না।
গ্যালিলিওর আমলে প্রায় প্রত্যেক বিখ্যাত ইউরোপীয় বৈজ্ঞানিক
ধর্মপ্রাণ খ্রীষ্টান ছিল’
এমনকি গ্যালিলিও নিজেই
একজন ধর্মপ্রাণ খ্রীষ্টান ছিলেন।
নিউটন, কপারনিকাস, কেপলার, বয়েল,
লিনিয়াস, প্যাসকেল
সকলেই বাইবেলে গভীর বিশ্বাস করতেন।
গ্যালিলিও,
একজন ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক,
তাকে চার্চ কখনই মৃত্যুদণ্ড দেয়নি।
১৬৩৩ সালের ২২শে জুন
তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
পরবর্তীতে তাকে
শুধু গৃহবন্দী রাখা হয়।
এরও অনেক পরে ১৬৪২ সালের
৮ই জানুয়ারি
তিনি স্বাভাবিক
মৃত্যুবরণ করেন।
গ্যালিলিও বিশ্বাস করতেন
যে তার সূর্যকেন্দ্রিকতাবাদ তত্ত্ব বাইবেলে সমর্থিত,
এবং এই বিষয়ে তিনি একটি বই লিখেন,
যেখানে তিনি অগস্টীনের মত কিছু প্রথম চার্চ ফাদার মন্তব্য
বা তফসীর তার পক্ষে ব্যবহার করেন।
নায়েক এই ভুল আরো
দু’বার বলেছেন,
কিন্তু আমরা সেটাকে মাত্র একটি ভুল হিসেবে ধরবো।
আসলে, ডারউইনের সময়কালে অধিকাংশ বৈজ্ঞানিক
তাঁর বিবর্তনবাদ তত্ত্ব
গ্রহণ করেননি
এবং এই বিজ্ঞানীদের অধিকাংশই
বাইবেলকে খুব সম্মান করতেন।
মূল কথা,
নায়েকের এই পুরা বর্ণনা
মনগড়া মাত্র।
এখানে ডাঃ নায়েকের প্রায় সব কথাই ভুল।
হোমোনাইট বা হোমোনাইড বলে কিছু নেই।
প্রকৃত শব্দটি হবে হোমিনিড
শুধু চারটি হোমিনিড নয়,
কমপক্ষে ১৪টি
প্রকার হোমিনিড্ আছে।
দ্লপিচেস্ট্ বলে কোন হোমিনিড্ নেই।
লুসি যে হোমিনিডের অন্তর্ভুক্ত তার নাম
অস্ট্রালোপিথেকুস আফারেন্সিস
বরফ যুগ মোটেই সাড়ে তিন মিলিয়ন বছর আগের ঘটনা না।
১.৬ মিলিয়ন বছর পূর্ব থেকে শুরু করে
এই ১০ হাজার বছর পূর্ব পর্যন্ত বরফ যুগ ছিল।
হোমো স্যাপিয়েন্স নাকি ৫০০ হাজার বছর আগে মারা গেছে।
আমি, আপনি, এমনকি জাকির নায়েকও
আমরা সবাই তো হোমো স্যাপিয়েন্স
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব মতে,
নিয়ানডার্থালরা আধুনিক মানুষের
পুর্বপুরুষ নয়,
বরং বরফযুগে অন্য শাখায় বিকশিত হয়েছে।
নিয়ানডার্থালরা ৩০ হাজার বছর আগে
বিলুপ্ত হয়েছিল,
একশ থেকে চল্লিশ হাজার বছর আগে” নয়।
ক্রো-ম্যাগনন আর হোমো স্যাপিয়েন
একই প্রজাতি,
যেটা নায়েক আগে আলাদা প্রজাতি
হিসেবে ধরেছে।
আসলে,
বিবর্তনমূলক-জীবিজ্ঞানীরা অনেক উদাহরণ
খুঁজে পেয়েছেন যেগুলো এই ধাপগুলোর মধ্যে
লিংক বলা যায়
যেমন ধরেন,
হোমো হাবিলিস্
হোমো এর্গাস্টের,
এবং হোমো হাইডেল্বার্গেন্সিস্
গ্যোর্গি ভিটামিন সি উদ্ভাবন করেননি, বরং তা আবিষ্কার করেছেন;
ভিটামিন সি একটি প্রাকৃতিক বস্তু,
সেটা তো উদ্ভাবন করা সম্ভব না।
আল্বার্ট সেন্ট্-গ্যোর্গির রচনার নাম
“ডি ক্রেজি এইপ এণ্ড ম্যান” নয়,
বরং শুধু
ডি ক্রেজি এইপ
এবং সেটা কোন বিবর্তনবাদের ভুলপ্রমাণ নয়
বরং একটি সমাজনৈতিক আলোচনা
রুপার্টস আলবার্ট কে?
এই নামে কাউকে কোথাও
খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ওয়াইট্মিট্? সার ওয়াইট্মিট্ আবার কে?
চতুর্থবারের মত,
এমন নামে কারো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
‘পারামিশিয়া’ বলে কিছু নেই
তিনি সম্ভবত ‘পারামিসিউম’ বোঝাতে চাচ্ছেন
কিন্তু আমিবা থেকে পারামিসিউমের
বিবর্তন যতটুকু,
বানর এবং মানুষের জীবতাত্ত্বিক পার্থক্য
আরও অনেক বেশী বড়
একটা পরিবর্তন
“হেন্সেস ক্রেইক” বলে কেউ নেই
নায়েক সম্ভবত র্ফ্যান্সিস ক্রিক্ বোঝাতে চাচ্ছে,
যিনি ডিএনএ-এর আবিষ্কারক
এই র্ফ্যান্সিক ক্রিক বিবর্তনবাদে মনপ্রাণ বিশ্বাসী ছিলেন