Tip:
Highlight text to annotate it
X
স্বাগতম আপনায় , নেটিজান, জুস মিডিয়ার সিরিজ
গীতিকাব্যে সাংবাদিকতার নতুন পর্বে আরেকবার, আমি রবার্ট ফস্টার:
এই সন্ধ্যায় আমারা গভীর অনুসন্ধানে রত
সেইসব বিষয়ে যা জড়িত আমাদের ইন্টারনেটে ওতপ্রোত
সাথে আমাদের বিশেষ স্বাগতম ভদ্র-মহিলা ও ভদ্র-মহচর,
এন.এস.এ, এ.এস.আই.ও, এম.আই৫ -এর প্রতি : আমরা খুব খুশি যে আপনারাও শুনছেন;
কারণ আজকের পর্বের বিষয়বস্তু যেভাবে সরকার মশায় নজরদারি করেন
আর কিভাবে তার জাল গ্রাস করবে রাজপথ থেকে মডেম
যেই মুহূর্তে আমারা ভাবছি স্বাধীন, তৈরি হচ্ছে ধুরন্ধর সব আইনি গেট
যাতে রুখে দেয়া যায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা, পঙ্গু করা যায় আমার সাধের ইন্টারনেট,
নিরাপদ রাখার জন্য, আমাদের বলা হয়; কিন্তু কাদের কাছ থেকে?
আর তাদের প্লান সফল হলে অন্তর্জালের স্বাধীন ভূমি ঢাকবে কোন্ কালো মেঘে?
যোগাযোগ করলাম আমাদের প্রথম অতিথির সাথে, খুঁজে পেতে এইসব প্রশ্নের উত্তর
আমাদের সাথে পেনটপ্টিকন থকে সরাসরি কথা বলছেন জেনারেল বেক্সটার,
জেনারেল - বৎস! -আমাদের সাথে আপনাকে আবার পেয়ে ভাল্লাগছে
দয়া করে বলুন তো আমাদের উপর কেন সার্বাক্ষনিক গোয়েন্দাগিরি চলছে? আমার ফেলো নেট-বাসিরা,
আপনারা জেনে থাকবেন, ইউরেশিয়া সাথে আমাদের চিরায়ত যুদ্ধের কথা...
নাকি এটা পূর্ব-এশিয়া? যাই হোক না কেন, এটা যুদ্ধ আর তার ব্রক্ষ্ণাস্ত্র হল ভেদাভেদের ঘৃণা!
কিন্তু টোকাইরা এখন যোগাযোগ করে অনলাইনে
বর্ণ, ধর্ম বা জাতীয়তার ভেদ বাইপাস করে...
- আমদের সম্ভাবনা অপার... - এইটা একটা ভয়ংকর ব্যাপার!
শতাব্দী ধইরা চালানো শোষণের ফর্মুলা নস্যাৎ হইতেছে, মুনাফা মিলাইতেছে হাওয়ায়
আর সব কিছুর গোঁড়াতে ঐ নচ্ছার ইন্টারনেট, এইটা মানবতারে মাথায় তুইলা নাচতেছে
এই কিরিঞ্চিরে থামাইতে হইব আমাদের, থামাইতে হইব এক্ষণই।
- কিভাবে? - শক্ত কইরা জারি করলাম 'ওয়ার অফ টেরর'
সেপ্টেম্বর এগারো সূত্রে পাওয়া শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার
আমাদের যেকোনো কাজের দোহাই হবে সে রাখবে পরিষ্কার
উপস্থাপন করলাম এই পুলিশি রাষ্ট্র, আপনাদের সামনে, ম্যাডাম আর জেনারেল সরকার।
গোপন তার বার্তায় তোমাদের চলাফেরা বন্ধী
আমাদের নথিতে আরও আছে সবার স্পিড ডায়াল লিস্টি
আছে চেহারা ও অবস্থান সনাক্ত করন পদ্ধতি,
আরও আছে তিন মাইলের মধ্যে কাউকে পিন পয়েন্ট করে ফেলার প্রযুক্তি!
নাগরিকদের মতামত না নিয়াই সর্বত্র নজরদারি কায়েম করা হয়েছে,
চাওয়া না চাওয়ার বালাই ছাড়াই, তোমাদের নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে।
তাই অতিসত্বর হুমকিতে পড়ার মত স্বাধীনতাও আর অবশিষ্ট থাকবে না।
তবেই আমাদের যুদ্ধ জয় হবে! নতুন নতুন টেররিজমের সীমানা!
- সত্য, ধন্যবাদ হাঁটু-বাহিনী প্রধান, পরবর্তী সাক্ষাৎকার
আসছেন আগাগোড়া ভিন্নমত নিয়ে, ট্যারেন্স মুন্সিড, আমাদের চিন্তার পাহাড়!
- শুভেচ্ছা। - পরিস্থিতি বলেন!
- এক কথায় শুনেন, রবার্ট: বাদ্য বাজাই চলেন!
৭,৪ বিলিয়ন মানুষ দুনিয়ায়, চলছে এক অদ্ভুত রথে
অরওয়েলিয়ান 'কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা' রাজনীতির ছকে
কণ্ঠে আমার উদ্বেগ ভরা, এক ভীষণ শীতল দমকা হাওয়া আসবে
আর এক ফাদের বেড়াজাল, আমাদের বিচরণ ভূমি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আটকা পড়ছে তাতে
ঘটনা হল: ফেসবুক সব দেখতে পায় এইটা একটা ভাইরাস
তার উপর আবার আছে আই-ফোনের (EYE-PHONE)'সিরি(SIRI)' নাকি বলব 'আইরিশ(IRIS)'?
পরের সংযোজনেই আছে আর.এফ.আই.ডি আর মাইন্ড চিপস
এগুলা ট্রিগার করবে কেমি-ট্রায়াল যা প্লেন থেকে স্প্রে করা হয় আমাদের মাথার উপরে
এদফায় তারা সব সীমা অতিক্রম কচ্ছে: ইয়ুঠায় এক বিশাল বেস স্টেশন তৈরি হচ্ছে
যেখানে সবার তথ্য হবে জমা ১ শতাব্দী ধরে, ওরে চোদন রে!
আর তার একটু পেছেনেই আছে তারের এক সুরঙ্গ পাতা,
''পাইন-গ্যাপ'' নামে এক ECHELON বেস, যেখানে হাইজ্যাক হবে আমাদের 'গায়া(Gaia)' মাতা.
- ওই, হয়তো তোমাদের জননী বেশি মাত্রায় গে! - ছিঃ! ছিঃ!
তারচে আরেক কাজ করো। নিজের সৈনিকদের মত তুমিও গলায় ফাঁস পর!
- খামোশ, এই দফায় তুই কাস্ট আয়রন লিস্টে গেলি
- এক মিনিট, জেনারেল, নাগরিকরা এসবের কিছুই জানতে পারছে না কেন?
- দুঃখিত যে আমারা মহা-পরিকল্পনা গুলা আগেভাগেই জানাতে চাই না সবাইকে,
হেহে, মূলত এটা সকলকে চমকে দেবার এক উপলক্ষ মাত্র।
অথচ কিছু নির্বোধ ফটকাবাজ পুরা মজাটাই মাটি করে দিল
আইন-কানুনের গুল্লি মাইরা হুইসেল বাজায়ে নিল।
- বিল বিনি আর টমাস ড্রেক দুই ট্রেইলব্লেজার যে কৌশল ফাঁস করে দিল...
- শোনো হে, স্বাধীনতাকামী ফ্যাগটিভিস্ট..থুক্কু অ্যাক্টিভিস্টঃ
আমারা যাই করি সেইটাই লিগ্যাল!
- কিভাবে... - সরকারকে কোন প্রশ্ন করা যাবে না, এইটাই ফাইনাল।
- আর এইটা তো গ্লোবাল, অস্ট্রেলিয়াতে এখন
সরকার সবার এস.এম.এস, সার্চ, ইমেইল স্টোর করে...যার সবই লিগাল...
এর সবই হইতেছে আপনাদের নাকে ডগায়, শোনরে অস্ট্রেলিয়ার বোন ও ভাইও
তোমাদের জাগতে হবে এক্ষণই, নইলে তোমাদের সব গোপন-তথ্য জানবে এ.এস.আই.ও।
- আরে মশাই! সবাই জানে সরকারের চে বড় ঈমানদার নাই
না চাইলে লুকাইতে কিছু, চিন্তা কিসের ছাই?!
- সেই প্যাঁচেই পড়ছেন সবাই, এমন গন্ধ পাই,
কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমত এইসব আইনের সাথে একমত
ইল্যুমিনাটিদের রণোকৈশল উন্মুক্ত হলে বুঝবে তুমি, কত সীমিত তোমার পথ
এই পুলিশি রাষ্ট্র তোমার মতামতের তোয়াক্কা করবে না তখন,
প্রতিবাদের রাস্তা বন্ধ হবে ততক্ষনে, রুদ্ধ হবে মত।
তুমি যা বল, লিখ, ব্রাউজ কর, তার সবই হাজির হবে তোমার বিরুদ্ধে প্রমাণ হয়ে।
- আমি ঠিক বুঝলাম না, তাহলে এখন উপায়?
- আমাদের কি করা উচিৎ? কিছুই না! এর সবটাই মায়া,
এ শুধু এক যাত্রাপথ, বিভ্রম, মেট্রিক্স, আমাদের বিভ্রান্ত করছে ডাকিনী কায়া।
- হাহাহা, তোমারা হিপিরা চিরদিন আমাদের কাজ এভাবেই সহজ করে দিবা...
- দুঃখিত যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য, কিন্তু সিগন্যাল পাচ্ছি অন্য
স্থান-কালের মাত্রা এ সিগন্যালের ভিন্ন
তাড়াতাড়ি, জুস মিডিয়ার চ্যানেলিং পোর্টালে যাও...
...এ... একি... জর্জ অরওয়েল?!
- শুভদিন ছোট্ট বন্ধু - আমরা গর্বিত আপনাকে এভাবে পেয়ে, তা কি মনে করে?
- আমি তোমাদের একাধিকবার সতর্ক করেছি খোকারা, কিন্তু তোমরা যে একদল সোজাসাপ্টা বোকারা
নতুবা ঠিকই বুঝতে যে এ বই মূলেতে এক দিক-নির্দেশনা-বলী।
- ইয়ে, মানে...দয়া করে আমাদের দিকনির্দেশনা দিন! বলুন তো আমারা কি করি?
- একটা মুক্ত ও সেন্সর বিহীন ইন্টারনেটই হলো তোমাদের সবচেয়ে বড় এবং কার্যকরী হাতিয়ার
পৃথিবী জোড়া এত সমস্যা জনসম্মুখে তুলে ধরার
তাই, তোমাদের প্রজন্মের সামনে সবচে বড় বাজি হল ইন্টারনেট'কে স্বাধীন রাখার!
- আমি হয়ত বুঝতে পারছি... - চুপচাপ শোন, ছোট্ট বন্ধু
কোনও অবস্থাতেই ইন্টারনেট বেদখল হতে দেয়া চলবে না। একটা কথা মনে রাখবেঃ
"ইন্টারনেট যে নিয়ন্ত্রণ করবে, সে ই তথ্যের দখল নিয়ে নিবে
আর যে ই তথ্যের দখল নিয়া নিবে, ভবিষ্যৎ হবে তার নিয়ন্ত্রণে"
- আপনার সিগন্যাল ভেঙ্গে যাচ্ছে - যাবার আগে আমি তোমাদের একটা টুল দিতে চাই...
- একটা পিঁয়াজ? - টগা'দের মত কথা বলবেনা রবার্ট। এটা একটা প্রতীক মাত্র
এর নাম "টর(Tor)" - টর ?
- গুগুল কর! এটা এ্যনোনিমিটির জন্য:
ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারের হাত থেকে বাঁচাতে এ দাতব্য পণ্য মোটের উপর অনন্য
কিন্তু তোমারা সকল খামখেয়ালি দুলাভাইরা একযোগে চালালেই মাত্র এটা শক্তিশালী হবে
আর ব্যবহার না করলেও এটা চালিয়ে রাখবে, তাতে অন্যরা উপকার পাবে.
- ধন্যবাদ, জনাব অরওয়েল - এখন থকে আমায় ডেকো: জর্জ টর-ওয়েল
পোড়া-কপাল, আমাদের সময় যদি এমন দারুন সব টুল থাকত
তাহলে বড়-মেয়াদের চোদাইয়া মুরি খাইতে বলা কতইনা সহজ হত
যতসব মাদারচোদের পোনা চুমারানির দল
- বহু ধন্যবাদ, জর্জ অরওয়েল, আমাদের পথ দেখালেন
ইতিহাসেরপৃষ্ঠা থকে উঠে এসে পুনর্বার এই অমোঘ বানী শুনালেন।
আমাদের শুনানো হয় নিত্য, লেকচার নিরাপত্তা জনিত, বুঝলাম,
কিন্তু সব বাঁধাধরা নিয়ম মেনে বিকশিত হয়েছে কোন সমাজ কবে?
এমন আছে বহু মনিষীর নজির যারা বন্দী হয়েছেন, থেকেছেন ''চিন্তার-অপরাধে'' আইনে হাজির
সময়টা পাল্টে গেলে নায়ক হয়ে আলো দিয়েছেন তারাই আবার যুগে যুগে।
কিন্তু সত্যিই যদি এমন ভীষণ নজরদারি রাষ্ট্রীয় পর্যায় একবার কায়েম হত
একবার শুধু ভেবে দেখুন তো সভ্যতার সব অর্জন যাবে না কি ধুলোয় মিশে:
নারী অধিকার বা সমকামীদের অধিকারের দাবী লড়াই কি চলত বা আদৌ তোলা যেত?
বিপ্লবী সব মতাদর্শ অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা হত
''বিজ্ঞান'' কি পথ দেখাতে পারত অথবা সে আদৌ কি ''বিজ্ঞান'' হয়ে উঠত?
প্রতিটা শব্দ যদি পুলিশ আর গোয়েন্দাদের নজরদারির মধ্যে পড়ত?
তাহলে বিগ-ব্রাদারের চিলিং এফেক্ট বন্ধ্যা করে দিত আমাদের সামগ্রিক আশাবাদ
কারণ সেতো নয় ৯৯% রক্ষক, ১% এর সুবিধা নিশ্চিত করে সে যে ভক্ষক,
আর এখন সে ইন্টারনেটের দখল নিতে চায়, একমাত্র মাধ্যম যা এখনও মুক্ত
আর তাই এর স্বাধীনতা ধরে রাখা এই প্রজন্মের গুরু কর্তব্য। �